Published : Wednesday, 5 January, 2022 at 12:00 AM, Update: 05.01.2022 12:34:35 AM
কুমিল্লার
মেঘনা উপজেলার কাঁঠালিয়া নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনায়
এলাকাজুড়ে শোকাবাহ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। শোকে মুহ্যমান স্বজনরা। মারা যারা
চারজনের মধ্যে তিনজনই আপন বোন। একসঙ্গে তিন মেয়েকে হারিয়ে অসীম শোকে কাতর
হয়ে এখন পাগলপ্রায় বাবা-মা। মঙ্গলবার থানা থেকে মেয়েদের লাশ নিয়ে যাওয়ার
সময় বুক চাপড়ে চিৎকার করে কান্না করতে থাকেন বাবা শেখ ফরিদ। বিলাপে বলছেন,
‘আমার কলিজার টুকরারা কইরে, আমার জান পাখিরা কইরে, আমার হিরা মানিক কইরে?’
শেখ
ফরিদ বলেন, ‘সোমবার আমি চিকিৎসক দেখাতে ঢাকা মেডিক্যাল গেছিলাম। তাদের মা
বাড়িতেই ছিল। আমার তিন মেয়ে ও তাদের নানু জুলেখা মামার বাড়ি কুমিল্লার
তিতাস এলাকায় যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার আমার তিন
মেয়ে ও তাদের নানু মারা যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে ঢাকার চিটাগাং
রোড এলাকার একটি মাদ্রাসায় পড়তো। আর ছোট মেয়ে তামান্নাকে একজন মহিলা শিক্ষক
বাসায় এসে পড়াতেন। স্বপ্ন ছিল, তারা অনেক বড় আলেমা হবে। আমার রাজকন্যাদের
আল্লাহ নিয়ে গেছে।’
মা পরিতন বিবি বলেন, ‘আমার আর বাঁচার কোনও কিচ্ছু নাই, সব শেষ। আমার এই জীবন কার জন্য রাখবো?’
তিন বোনের লাশ পাশাপাশি কবরেই দাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তাদের বাবা শেখ ফরিদ। তবে কোথায় তাদের দাপন করা হবে এটি এখনও নিশ্চিত হয়নি।
কুমিল্লার
মেঘনা উপজেলার কাঁঠালিয়া নদীতে ট্রলার ডুবে প্রাণ হারানো চার জনই একই
পরিবারের। দুর্ঘটনায় আরও সাত জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- জেলার তিতাস
উপজেলার রায়পুর গ্রামের আব্দুল মতিন মিয়ার স্ত্রী জুলেখা আক্তার (৫৫), তার
মেয়ের ঘরের নাতনি আয়েশা আক্তার (১২), মরিয়ম আক্তার (৭) ও তামান্না আক্তার
(১০)।
নিহতরা সবাই ঢাকার ডেমরা থানার সুকশি এলাকায় বসবাস করেন।
মামার বাড়ি তিতাস উপজেলার মোহনপুর গ্রামে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনার শিকার হন
তারা।