আজ রবিবার সকাল আটটা থেকে শুরু হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবার। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে এই পরিবারকে ফ্যাক্টর মনে করা হয়। তবে এবারের সিটি নির্বাচনে এই পরিবারের প্রভাবশালী দুই সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমান ভোট দিতে পারছেন না।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সিটি কপোরেশন এলাকার ভোটার নন। তিনি আগে সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটার ছিলেন। ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করায় তিনি বর্তমানে এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভোটার। ফলে সরকার দলীয় আলোচিত এই সাংসদ ভোট দিতে পারছেন না।
এই পরিবারের আরেক সদস্য, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটার। তবে তিনিও এই নির্বাচনে ভোট দিতে পারছেন না। জানা গেছে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
তবে একই পরিবারের দুই সাংসদ নিজেরা ভোট দিতে না পারলেও এই নির্বাচনে তাদের বড় প্রভাব রয়েছে। শামীম ওসমান নৌকার বিপক্ষে কাজ করছেন এমন অভিযোগ ওঠার পর সম্প্রতি তিনি সংবাদ সম্মেলনে এসে নৌকার পক্ষে থাকার কথা জানিয়েছেন। সংসদ সদস্য হওয়ায় ভোটের প্রচারে অংশ নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে বিরোধ থাকায় শেষ পর্যন্ত তার সমর্থকদের ভোট নৌকায় পড়বে কি না সেটা নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন।
সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। এই সিটিতে জাপা কোনো প্রার্থী দেয়নি। ঘোষণা দিয়ে কোনো প্রার্থীকে সমর্থনও করেনি। তবে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত তিনজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, যারা সেলিম ওসমানের স্নেহধন্য হিসেবে পরিচিত, তারা ইতিমধ্যে বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচার চালিয়েছেন। এ হিসেবে সেলিম ওসমানের সমর্থকদের ভোট তৈমূরের হাতি প্রতীকে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী সকাল সাড়ে ৯টায় দেওভোগের শিশুবাগ স্কুলে ভোট দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার সকাল আটটায় নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল (এম এ) মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার কথা রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট প্রার্থী রয়েছেন ১৮৯ জন। তাদের মধ্যে মেয়র প্রার্থী সাতজন। সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর হিসেবে লড়ছেন ৩৪ জন। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১৪৮ জন প্রার্থী। ১৯২টি কেন্দ্রে ভোটকক্ষ রয়েছে এক হাজার ৩৩৩টি।
সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ভোটার সংখ্যা পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৫৯ হাজার ১৪৬ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৫৭ হাজার ৫১১ জন আর হিজড়া রয়েছেন চারজন।
ভোটকেন্দ্রে সার্বিক নিরাপত্তা বাস্তবায়নে ৩৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।