এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
আজ
দেবীদ্বারে নজিরবিহীন নিরাপত্তা বেষ্টুনিতে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে
যাচ্ছে। এবার নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে সুষ্ঠ ও অবাধ পরিবেশে ব্যাপক উৎসাহ
উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক মেরুকরণে সরকার দলের বিভাজনে নৌকার চরম
ভরাডুবি হতে পারে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সপ্তম ধাপে আজ (৭
ফেব্রুয়ারী) কুমিল্লার দেবীদ্বারে নির্বাচনে বিপুল উৎসাহ- উদ্দীপনায় এবং
কিছু কিছু ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের ভয় ও আতঙ্কের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতে
যাচ্ছে। ১৫ ইউনিয়নের মধ্যে বরকামতা ও গুনাইঘর (দঃ) ইউনিয়নসহ ২টিতে ইভিএম
পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন হবে।
১নং বড়শালঘর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী
সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইউনুছ মাষ্টার’র সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আরো ৪ জন। এ
ইউনিয়নে এগিয়ে আছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ আব্দুল আউয়াল (আনারস) তার
পরের অবস্থানে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ জহরিুল ইসলাম জারু ভূঁইয়া
(চশমা)। সংরক্ষিত সদস্য ০৯জন, সাধারণ সদস্য ৩২জন।
২নং ইউসুফপুর ইউনিয়নে
নৌকা প্রতীকের মোঃ কবির হোসেন (নৌকা)’র সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন আরো
৫জন। এদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এগিয়ে আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা
আলহাজ¦ মোঃ জাকারিয়া ম্যানেজার (আনারস), অধ্যাপক মোঃ মাজহারুল হক মামুন
(ঘোড়া)। সংরক্ষিত সদস্য ০৭জন, সাধারণ সদস্য ৩৫জন।
৩নং রসুলপুর ইউনিয়নে
নৌকা প্রতীকের মোঃ কামরুল হাসান (নৗকা)’র সাথে আরো ৬ প্রার্থীর মধ্যে মোঃ
শাহজাহান সরকার (ঘোড়া) মোঃ মাহবুব আলম (আনারস)’র মধ্যে তৃমূখী
প্রতিদ্বন্দ্বা হবে। সংরক্ষিত সদস্য ১০জন, সাধারণ সদস্য ২৮জন।
৪নং
সুবিল ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের মোঃ নজরুল ইসলাম সরকার’র সাথে আরো ৫ জন
প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক
সাধারন সম্পাদক গোলাম সারওয়ার মুকুল ভূইয়া (চশমা) এগিয়ে আছেন। ভোট কেন্দ্র
দখল না হলে কিংবা সুষ্ঠ নির্বাচন হলে চশমা প্রতীকের বিজয়ের হাসী মিলবে। তার
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আবু তাহের (আনারস)।
সংরক্ষিত সদস্য ০৯জন, সাধারণ সদস্য ৪৩জন।
৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নে সর্বেচ্চ
চেয়ারম্যান প্রার্থী ১৫জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা রয়েছেন। এদের মধ্যে নৌকা
প্রতীকের প্রার্থী শাহনাজ পারভীন’র পরিবারেই ৫জন প্রতিদ্বন্দ্বী। নৌকা
প্রতীকের প্রার্থী’র পরিবারের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন শাহনাজ
পারভীনের সৎ ছেলে মোঃ আল মামুন বাবু (২টি পাতা), ভাসুর বর্তমান চেয়ারম্যান ও
ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার এম,এ,সালাম (আনারস), ভাসুর পুত্র
খন্দকার মোঃ ফখরুল ইসলাম (কাপপিরিচ) ও খন্দকার মোঃ মজিবুর রহমান (মোটর
সাইকেল)। এছাড়াও উক্ত ইউনিয়নে ইউনিয়নে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে ৪
হ্যাভিওয়েট প্রার্থী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান মাসুদ
(দোয়াত কলম), আ’লীগের সভাপতি মোঃ মফিজুল ইসলাম (ঢোল), ইউনিয়ন তাতী লীগের
সাধারন সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ঘোড়া)’র মধ্যে। এছাড়াও এ ইউনিয়নে ওয়ার্ড
আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সাম মিয়া (অটোরিক্সা), আওয়ামীলীগ
সদস্য মোঃ আলেক মিয়া (টেবিলফ্যান), মোঃ এরশাদ মিয়া (টেলিফোন), মোঃ সাদ্দাম
হোসেন (রজনীগন্ধ্যা), বিএনপি সমর্থক মোঃ জহিদ হাসান (চশমা), মোঃ আবুল
বাশার খান (লাঙ্গল), মোঃ দেলোয়ার হোসেন (হাতপাখা)। সংরক্ষিত সদস্য ১০জন,
সাধারণ সদস্য ৩৯জন।
৭নং এলাহাবাদ ইউনিয়নে ৫বারের নির্বাচিত নৌকা
প্রতীকের প্রার্থী (বর্তমান চেয়ারম্যান) মোঃ সিরাজুল ইসলাম সরকার’র সাথে
আরো প্রতিদ্বন্দ্বী ৪জন। তবে তার সাথে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী সেচ্ছা সেবক
লীগের জেলা নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ নুরুল আমিন (চশমা)। নৌকা- চশমা সমান
তালে থাকলেও এ আসনে এলাহাবাদ গ্রামের ঐক্য খুবই শক্তিশালী হওয়ায় নৌকার
বিজয় খুবই কষ্টকর হবে। সংরক্ষিত সদস্য ০৫জন, সাধারণ সদস্য ৩১জন।
৮নং
জাফরগঞ্জ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের মোঃ আনোয়ার হোসেন’র সাথে আরো ৮জন
প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। নৌকা প্রতীকের সাথে মোঃ জাহিদুল আলম (আনারস) মূল
প্রতিদ্বন্দ্বী, সাথে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসেন (চশমা)। এ
আসনেও নৌকা প্রতীক শ^ারোধক অবস্থায় রয়েছে। সংরক্ষিত সদস্য ১২জন, সাধারণ
সদস্য ৩০জন।
৯ নং গুনাইঘর(উত্তর) ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের মোহাম্মদ মুকবল
হোসেন সাথে ১০জন প্রতিদ্বন্দ্বীতায় থাকলেও হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হবে মোঃ আলী
আজ্জম স্বজল (ঘোড়া)’র সাথে। তার পেছনে আছে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ খোরশেদ
আলম (আনারস)। সংরক্ষিত সদস্য ০৯জন, সাধারণ সদস্য ৩৬জন।
১০ নং গুনাইঘর
(দক্ষিন) ইউনিয়নে এগিয়ে আছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামীলীগ কুমিল্লা
(উঃ) জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কেন্দ্রীয কমিটির
সভাপতি আলহাজ¦ মোঃ হুমায়ুন কবির। তার সাথে আরো দু’জন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাকিম খান (আনারস)। এ
আসনে ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সংরক্ষিত সদস্য ১৪জন,
সাধারণ সদস্য ৪০জন।
১১নং রাজামেহার ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী
বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তার সাথে আরো রয়েছেন ৪জন
প্রতিদ্বন্দ্বী। এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ জসীম উদ্দিন সরকার (চশমা)।
চশমা প্রতীকের মোঃ জসীম উদ্দিন সরকারকে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তহশীলদার সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়ানোর কারনে
নৌকার বিজয় অনেকটা ক্ষিন হয়ে উঠেছে। সংরক্ষিত সদস্য ১০জন, সাধারণ সদস্য
৪২জন।
১২নং ভানী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ
নুরুজ্জামান ভূইয়া। তার সাথে রয়েছেন আরো ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। রাজনৈতিক
টানপোড়ানে এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হতে পারে মোঃ হানিফ খান (ঘোড়া)’র
সাথে মোঃ জালাল উদ্দিন ভূইয়া (মোটর সাইকেল)’র। সংরক্ষিত সদস্য ১০জন, সাধারণ
সদস্য ৪১জন।
১৩নং ধামতী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ জসীম
উদ্দিন। তার সাথে আরো ৪জন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে
এগিয়ে আছেন স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মহিউদ্দিন
মিঠু (আনারস)। সংরক্ষিত সদস্য ০৮জন, সাধারণ সদস্য ৪৬জন।
১৪নং সুলতানপুর
ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে এগিয়ে আছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক মোঃ
হুমায়ুন কবির। তার সাথে আরো ৪ প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা
হবে বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ সফিকুল ইসলাম (মোটর সাইকেল)। সংরক্ষিত সদস্য
০৯জন, সাধারণ সদস্য ৪২জন।
১৫নং বরকামতা ইউনিয়নে এগিয়ে আছেন নৌকা
প্রতীকের প্রার্থী (উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পিতা) বর্তমান চেয়ারম্যান
মোঃ নুরুল ইসলাম। এ আসনে আরো ৫জন মোঃ মিজানুর রহমান (আনারস), মোঃ মাহবুব
আলম ভূইয়া (চশমা), মোঃ লুৎফর রহমান (মোটরসাইকেল), মোঃ হারুন-অর-রশিদ
(ঘাড়া), মোঃ হারুন-অর-রশীদ সরকার (লাঙ্গল)। তবে এ আসনে ইভিএম পদ্ধতিতে
নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সংরক্ষিত সদস্য ১৩জন, সাধারণ সদস্য ৩৬জন।
১৬নং
মোহনপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মোঃ
মুজিবুর রহমান। তার সাথে রয়েছেন আরো হেভীওয়েট ৫ প্রার্থী। ইউনিয়ন আ’লীগের
সাবেক সভাপতি মোঃ ময়নাল হোসেন (মোটরসাইকেল), ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক সাধারন
সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম (আনারস), মোঃ শাহ আলম খোকন
(ঘোড়া), মোঃ আব্দুল গফুর (টলিফোন)। এ আসনে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হবে। বিজয়ের
মালা কে পড়বেন ৭ ফেব্রুয়ারীই নির্ধারিত হবে। সংরক্ষিত সদস্য ১০জন, সাধারণ
সদস্য ৩৭জন।
উপজেলার ১৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১০৩ জন প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এদের মধ্যে নৌকা প্রতীকে ১৫জন, লাঙ্গল প্রতীকে
৫জন, হাত পাখা প্রতীকে ১২জন, জাকের পার্টির ১জন এবং স্বতন্ত্রপদে ৭০জন
প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। প্রতিটা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন বঞ্চিত
একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এসব ইউনিয়নে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের
সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারন সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদের অন্তত: অর্ধশতাধিক
প্রার্থী রয়েছেন। তাদের সেল্টারে রয়েছেন আ’লীগ ও বিএনপি’র শীর্ষ একাধিক
নেতা। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বী ১০৩জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে সংরক্ষিত
মহিলা আসনে- ১৪৫জন এবং সাধারণ সদস্য পদে- ৫৫৮জনসহ মোট ৮০৬ জন প্রার্থীর
মধ্যে ৭নং এলাহাবাদ ইউনিয়নের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনে নাছিমা
বেগম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন
কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ পেিবশে নির্বাচন
সম্পন্ন করতে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আইন শৃংখলা বাহিনীও
প্রস্তুত।