দেশে
করোনাভাইরাসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আট হাজারের নিচে নেমে এসেছে তিন
সপ্তাহ পর; সেই সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার আরও কিছুটা
কমেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায়
৪২ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে সাত হাজার ২৬৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে,
মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে
দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে। এরপর
আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে
সংক্রমণ।
গত ১৭ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাত হাজার
ছাড়িয়েছিল। এরপর সংক্রমণ টানা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা
১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। মুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ২৮ জানুয়ারি
পৌঁছায় ৩৩ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়।
এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু
করে, ৪ ফেব্রূয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। ছয় দিনের
মাথায় তা ৮ হাজারের নিচে নামল।
তিন সপ্তাহ পর বুধবার শনাক্ত রোগীর হার
কমে ১৮ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছিল। বৃহস্পতিবার তা আরও কমে ১৬ দশমিক ৯৫
শতাংশ হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত নতুন
রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ
৯৪ হাজার ৫৩৫ জনে। একদিনে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে করোনাভাইরাসে
মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮ হাজার ৭৪৪ জন।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ১১ হাজার ৪৬ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৮ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
এই
হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ২১ হাজার ১৬৩ জন।
অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে
উপসর্গবিহীন রোগীরা আক্রান্তরা এই হিসাবে আসেনি।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫২ শতাংশ।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে চার হাজার ৯৬৬ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬৮ শতাংশের বেশি।
যে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ২৭ জন পুরুষ, ১৪ জন নারী। তাদের মধ্যে ২২ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।
এছাড়া
চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় জন, রাজশাহী বিভাগের পাঁচজন, খুলনা বিভাগের তিনজন,
সিলেট বিভাগের দুইজন এবং রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন তিনজন।
তাদের ২৮ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, ছয়জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর,ছয়জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং একজনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
বাংলাদেশে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর ১
ফেব্রুয়ারি তা ১৮ লাখ পেরিয়ে যায়। তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক
বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী
শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে
প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর
কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪
জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৭ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪০ কোটি ৩৩ লাখ।