দেশে ওমিক্রনের বিস্তার কমে আসায় একদিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা এক মাস পর নেমে এসেছে চার হাজারের নিচে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৩ হাজার হাজার ৯২৯ জন জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি এক দিনে এর চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল। সেদিন ৩ হাজার ৪৭৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
আর গত ২৩ জানুয়ারি একদিনে এর চেয়ে কম মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সেদিন ১৪ জন কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি শনাক্তের হার ১৩ শতাংশ ছাড়ায়, ওইদিন হার ছিল ১৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রভাবে দেশে জানুয়ারির শুরু থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে। ১ জানুয়ারি যেখানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চারশর নিচে ছিল, ১৬ জানুয়ারি তা চার হাজার ছাড়ায়।
মাত্র নয় দিনে ২৫ জানুয়ারি তা পৌঁছায় ১৬ হাজারের ঘরে। ২৮ জানুয়ারি শনাক্তের হার পৌঁছায় রেকর্ড ৩৩ শতাংশে। তবে জানুয়ারির শেষ দিক থেকেই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে।
নতুন রোগীদের নিয়ে মহামারীর মধ্যে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৩১ জনে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৮৮৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ ভাইরাস।
সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ১২ হাজার ৭৫৭ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠলেন ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৬৬ জন।
সে হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭৮ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ২ হাজার ৬১৪ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬৬ শতাংশের বেশি।
যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং পাঁচজন নারী। তাদের মধ্যে পাঁচ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের চারজন, খুলনা বিভাগের দুইজন, বরিশাল বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের একজন এবং রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন একজন।
তাদের নয়জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, চারজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৮ লাখের ৩৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪১ কোটি ৫৭ লাখ।