এমএ কাশেম ভূঁইয়া-হোমনা ||
কুমিল্লার
হোমনার আসাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচরের চাঞ্চল্যকর যুবলীগ কর্মী সালাউদ্দিন
(২৬) হত্যাকান্ডের ঘটনার মামলা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন ও তার
ভাতিজা, ছেলেসহ ২৪জনকে আসামী করে মামলা রুজু করা হয়েছে।
নিহতের বড় বোন পারুল আক্তার বাদী হয়ে আজ ১৯ফেব্রুয়ারী শনিবার হোমনা থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
তবে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত এই লোমহর্ষক হত্যার ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনী থানা পুলিশ।
মামলার
অভিযোগে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হোমনার
আসাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর গ্রামের তেবাগিয়া লোহার ব্রিজে যুবলীগে কর্মী
মো. সালাউদ্দিন ওরফে জহিরকে (২৬) ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, তার ভাতিজা
মুকবল পাঠান, ছেলে রাসেলসহ একদল সন্ত্রাসী গতিরোধ করে রামদা, চাপাতী দিয়ে
এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাতের, পায়ের ও ঘাড়ের রগ কেটে ফেলে এবং কুপিয়ে হাতের একটি
আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন অংশে হাতুড়ি দিয়ে
পিটিয়ে থেতলে মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা।
জহিরের চিৎকারে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও ধাওয়া দেয়।
পরে
রাতে হোমনা থানা পুলিশের সহযোগিতায় লোকজন আহত সালাউদ্দিনকে হোমনা
হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে রেফার করেন। ওইদিনই চিকিৎসাবস্থায় গভীর রাতে সালাউদ্দিন মারা
যান।
এদিকে সালাউদ্দিন আহত অবস্থায় ঘাতকদের নাম বলে গেছেন, সেই ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী
সূত্রে জানা যায়, গেলো ইউপি নির্বাচনের জের ধরে এই নির্মম হত্যাকান্ড
সংঘটিত হয়েছে। নিহত সালাউদ্দিন নৌকা মার্কার পরাজিত প্রার্থী সিদ্দিকুর
রহমানের সমর্থক ছিলেন। আর আনারস মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী জালাল পাঠান
জয়ী হন। এই হত্যা মামলায় চেয়ারম্যান জালাল পাঠান ২নং আসামী। এবং আরেক
সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া) নারী পাচার মামলার সাজাখাটা আসামী
মুকবল পাঠানকে মামলায় ১নং আসামী করা হয়।
হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ
সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান আবুলের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, গতকাল
রাতেই মকবুল পাঠান ১নং ও ইউপি চেয়ারম্যান জালাল পাঠানকে ২নং আসামী করে ২৪
জনের নামে মামলা রুজু হয়েছে। এছাড়াও আরো ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাত রাখা হয়েছে।
তিনি
এই নির্মম নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং হত্যাকান্ডে
জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।এলাকাবাসী জানান, হোমনা এখন এক
ভয়াল সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে। খুন, চুরি-ডাকাতি, রাহাজানি,
দাঙ্গা-হাঙ্গামা, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, হামলা ও মিথ্যা মামলাসহ নানাহ
অপরাধের বেড়াজালে বন্দী হোমনা।
এ বিষয়ে হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ মো.
আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, নিহতের বড় বোনের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা
রুজু করা হয়েছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও আসামী
গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে। খুব তাড়াতাড়ি আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব
হবে বলে মনে করছি।