মো. হাবিবুর রহমান
কুমিল্লার মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পিতাকে না পেয়ে ২২ মাসের শিশুকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা তুলে নিলে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। শুক্রবার সাংবাদিকদের কাছে এমন কথাই জানিয়েছেন, উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের শিশু আব্দুর রহমানের পিতা প্রবাসী শাহীন আলম। জানা যায়, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে গাজীপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের সাথে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী শাহীন আলমের কথা কাটাকাটি হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে শাহীন আলমের উপর আক্রমন করতে আসলে লোকজন তাকে ঘরের ভিতর লুকিয়ে রাখে। তার উপর আক্রমন করতে না পেরে ক্ষুদ্ধ হয়ে গেটের বাহিরে থাকা অবুঝ শিশু আব্দুর রহমানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় শিশুটিকে বাঁচাতে গিয়ে চাচাতো বোন রেহানা বেগম (৩০) ও সোনিয়া আক্তারকেও (১৬) আহত করে। আহতদেরকে চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় শিশুটির মা রুজিনা আক্তার বাদী হয়ে মামলা করলেও এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
শিশুটির চাচী জোসনা বেগম বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে আল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, শুভ ও সুমনসহ একটি চক্র দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় আমার দেবর শাহীন আলম প্রাণ ভয়ে বিল্ডিংয়ের ভিতর লুকিয়ে থাকে। সন্ত্রাসীরা তাকে মারতে না পেরে গেইটের সামনে থাকা দুধের শিশু আব্দুর রহমানকে কুপিয়ে জখম করেন। এ তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে আমার মেয়ে রেহানা বেগম ও সোনিয়া আক্তারসহ আরো কয়েকজন আহত হয়।
শিশুটির পিতা শাহীন আলম বলেন, আল ইসলাম ও নজরুল ইসলামের লোকজন কর্তৃক আমি আগেও হামলার শিকার হয়েছি। ১১ মাস আগে তারা আমাকে মারার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ওই ব্যাপারে থানায় অভিযোগও আছে। এখন আবার আমাকে মারার জন্য বাড়িতে এসে আক্রমন চালায়। আমি ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও আমার নিষ্পাপ দুধের শিশুটিকে কুপিয়ে জখম করে ফেলে যায়। বর্তমানে মামলা তুলে নিতে তারা বিভিন্ন ভাবে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি এবং আমার পরিবার আতংক ও উৎকন্ঠার মধ্যদিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
স্থানীয়রা জানায়, নজরুল, আল ইসলাম, শুভদের অত্যাচারে শাহীন আলমের পরিবারটি মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্ত। ওইদিন শাহীন আলমকে মারতে না পেরে তার অবুঝ শিশুটিকে নৃসংশভাবে দা দিয়ে কুপিয়েছে। আল ইসলামের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম বলেন, আমি ঢাকায় ব্যবসা করি। ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।