আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার মিশনে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করতে নামলেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বেশি পুঁজি পায়নি স্বাগতিকরা। তৃতীয় ওয়ানডেতে ৪৬.৫ ওভারে অলআউট হয়েছে ১৯২ রানেই!
চট্টগ্রামে আজ ৫০তম ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলেন লিটন। মাইলফলকের ম্যাচটা হাফসেঞ্চুরিতেও রাঙিয়েছিলেন। শুরুর জড়তা কাটিয়ে এমন ছন্দ তুলেছিলেন, মনে হচ্ছিল সেঞ্চুরিটাও বুঝি পেয়ে যাবেন। কিন্তু ৮৬ রানে ব্যাট করতে থাকা ব্যাটার ফেরার পরেই এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং। বাকিরা কোনও ভূমিকাই রাখতে পারেননি!
পরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল ধীর গতির। পাশাপাশি নড়বড়েও। শুরু থেকেই ফজল হক ফারুকির পেসে খেলতে সমস্যা হচ্ছিল তামিম ইকবালের। দ্বিতীয় বলেই আবেদন উঠে লেগ বিফোরের। কিন্তু আম্পায়ার সাড়া দেননি।
একই দশা ছিল লিটন দাসেরও। তৃতীয় ওভারে ফজল হক ফারুকির বলে ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন। দেখে মনে হচ্ছিল বল প্যাডে লেগেছে। আফগানরা এলবিডাব্লিউর আবেদন করলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি তাতে। পরে রিভিউ নিলে দেখা যায় ব্যাট ছুঁয়ে প্যাডে লেগেছে বল।
নড়বড়ে শুরুর ষষ্ঠ ওভারে ক্যাচও উঠে তামিমের। কিন্তু মুজিবের বলে ইনসাইড এজ হলেও কঠিন ক্যাচ গ্লাভসে জমাতে পারেননি কিপার। কিন্তু ১১তম ওভারে ফারুকির বলে আর শেষ রক্ষা হয়নি। আগের দুই ম্যাচের মতো প্রায় একই ডেলিভারিতে তামিমকে বিপদে ফেলেছেন আফগান পেসার। শেষ দুই ম্যাচে লেগ বিফোরে ফিরলেও এবার ভেতরে ঢুকে পড়া বলে হয়েছেন বোল্ড। একই ওভারে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে আউট হয়েছিলেন সাকিবও। কিন্তু বামহাতি ব্যাটার রিভিউ নিয়ে বেঁচেছেন।
শুরুর এই ধাক্কার পর মূলত লিটনের ব্যাটেই জড়তা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ। এই সময় তাকে সঙ্গ দেন সাকিবও। কিন্তু সফট ডিসমিসালে কপাল পুড়েছে তার। এক পর্যায়ে লিটনের যোগ্য সঙ্গী-ই হয়ে উঠেছিলেন। ৪৩ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর ৬১ রান যোগ করে এই জুটি। শত রানও ছাড়ায় তাদের কল্যাণে। পোক্ত হয়ে ওঠার পথে সাকিব বোল্ড হয়েছেন ওমারজাইয়ের বলে। তার ৩৬ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার।
সাকিবের বিদায়ের পরেই ছন্দ পতন ঘটে ইনিংসে। আঘাত হানেন রশিদ খান। ২৭তম ওভারে শুরুতে মুশফিককে গ্লাভসবন্দি করিয়েছেন। তার পর ইয়াসির আলীকেও গুলবাদিনের ক্যাচ বানান আফগান লেগ স্পিনার। মুশফিক করেছেন ৭ রান আর ইয়াসির মাত্র ১।
তবে একপ্রান্ত আগলে দলকে তখনও এগিয়ে নিতে থাকেন লিটন। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির কাছেই ছিলেন। কিন্তু ৮৬ রানে নবীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়েছেন গুলবাদিন নাইবের। তার বিদায়ের পরেই মূলত দিশা হারিয়ে ফেলে ব্যাটিং।
মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি বাকিরাও। প্রথম ম্যাচ জয়ের নায়ক আফিফ নবীর বলে ক্যাচ তুলে ফিরেছেন। করেছেন মাত্র ৫। তার মতো ব্যর্থ ছিলেন মিরাজও। রান আউটে অফস্পিনিং অলরাউন্ডার ফিরেছেন ৬ রানে। রশিদের বলে তাসকিন লেগ বিফোরে ফিরলে পতন হয় অষ্টম উইকেটের। অথচ তখনও একপ্রান্ত আগলে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বাকি দুই ব্যাটার শরিফুল ও মোস্তাফিজুর দ্রুত ফিরে গেলে দুইশোর আগেই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। শেষের দুই ব্যাটারই ফিরেছেন রানআউটে!
আফগানদের দুই স্পিনারই ইনিংসের দৃশ্য বদলে দিয়েছেন। রশিদ খান ৩৭ রানে নেন ৩ উইকেট। ২৯ রানে দুটি নেন মোহাম্মদ নবী। দুটি নিয়েছেন ফজল হক ফারুকি ও আজমতউল্লাহ ওমারজাই।