করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমার ধারায় দেশে শনাক্ত রোগী আগের সপ্তাহের তুলনায় ৫১ শতাংশ কমে এসেছে, এই সময়ে মৃত্যু কমেছে ২৩ শতাংশের বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ৪৩৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৪৭ হাজার ৭০২ জন। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে।
সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ৩ হাজার ৫৪৬ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৮ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে কোভিড শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫৮৬ জনের। এর আগে সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ৩৮৯ জন। অর্থাৎ এক সপ্তাহে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ।
গত সাত দিনে ৫২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছিল ৬৮ জনের। সে হিসাবে এক সপ্তাহে মৃত্যুর সংখ্যা ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশে মহামারীর শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারে চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকে দ্রুত। ২৮ জানুয়ারি তা ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়। ফেব্রুয়ারি থেকে আবার তা কমতে শুরু করে।
গত এক দিনে সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ ছিল। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৩৩২ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭৬ শতাংশের বেশি।
যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। তাদের মধ্যে তিনজন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। বাকিদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং একজন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
তাদের মধ্যে তিনজনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, একজনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৬০ লাখের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৬৩ লাখের বেশি।