ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
তথ্য কমিশনের রায় তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে
Published : Friday, 11 March, 2022 at 12:00 AM
তথ্য কমিশনের রায় তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবেগত মঙ্গলবার তথ্য কমিশন তথ্য অধিকার আইনে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে চাওয়া তথ্য আগামী ২০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীকে সরবরাহের আদেশ দিয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষের তথ্য পাওয়ার অধিকার যেমন সুরতি হবে, তেমনি প্রতিষ্ঠানটির প্রতি জনগণের আস্থাও বাড়বে। আমরা তথ্য কমিশনের আদেশকে স্বাগত এবং দ্রুত আদেশ কার্যকর করার দাবি জানাই।
লেখক, গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী সাদ হাম্মাদি ২০২১ সালের ৭ জুন পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর থেকে এ আইনে প্রতিবছর দায়ের করা মামলার সংখ্যা, অভিযুক্ত ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সংখ্যা তিনি জানতে চান। তথ্য না পাওয়ায় তিনি গত ১৮ জুলাই পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবর আপিল আবেদন করেন। নির্ধারিত সময়ে আপিল আবেদনের জবাব না পাওয়ায় সাদ হাম্মাদি গত ১০ আগস্ট তথ্য কমিশনে অভিযোগ করেন। সাদ হাম্মাদি বাংলাদেশের নাগরিক ও মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দণি এশীয় অফিসে (শ্রীলঙ্কা) কর্মরত।
এ প্রসঙ্গে প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ বলেন, এ রায় জনগণ ও গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে এবং সেই সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে একটি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পুলিশ কর্তৃপ এ তথ্য দিতে আর কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না।
পুলিশ বিভাগ যেসব কারণ দেখিয়ে তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, তা ছিল সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কতটি মামলা হয়েছে, কতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, এসব তথ্য কোনোভাবেই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয় কিংবা বিচারকে প্রভাবিত করারও কোনো কারণ নেই। আমরা প্রায়ই দেখি আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সদস্যরা আসামিদের আটক করে গণমাধ্যমের সামনে নিয়ে আসেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তথা মামলার বিশদ বিবরণ দেন। আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীগুলোর প্রতিবেদনেও অপরাধের ধরন, মামলা ও আসামিদের সম্পর্কিত বিবরণ থাকে। এ অবস্থায় কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার পে কোনো নির্দিষ্ট আইনের অধীনে মামলা ও আসামির সংখ্যা জানতে চাওয়াকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখার সুযোগ নেই। বরং আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর প থেকে সঠিক তথ্যটি দেওয়া হলে জনমনে যেসব বিভ্রান্তি আছে, তা দূর হবে।
যেসব তথ্যের সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিষয়টি জড়িত নয়, সেসব তথ্য প্রকাশ করতে হবে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের স্বার্থেই। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মনে থাকার কথা, তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যেই ২০০৯ সালে তথ্য অধিকার আইন করা হয়েছিল। তথ্য লুকিয়ে রাখার জন্য নয়।তথ্য কমিশনের এ আদেশের পর আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান বা বিভাগ জনগণকে তথ্য পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না। মানুষ যদি তথ্যই না পায়, তাহলে আইন কার্যকারিতা হারাতে বাধ্য। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে ল করছি, তথ্য অধিকার আইন জনগণকে তথ্য পাওয়ার অধিকার দিয়েছিল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তা হরণ করা হয়েছে। অতএব মানুষের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হলে এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব আইন ও বিধিই বাতিল করতে হবে।