ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা
কুমিল্লায় চারদিনে ঝরলো ১০ প্রাণ
Published : Sunday, 13 March, 2022 at 12:00 AM, Update: 13.03.2022 1:16:22 AM
 কুমিল্লায় চারদিনে ঝরলো ১০ প্রাণজহির শান্ত: কুমিল্লায় প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা; ঝরছে তাজা প্রাণ। গত চারদিনে জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা ও ট্রেনে কাটা পড়ে পাঁচ শিশু, এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার দিবাগত রাতে ও শনিবার সকালে জেলার চৌদ্দগ্রামে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও গত শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বুড়িচংয়ে প্রাইভেটকার চাপায় শিশুসহ দুইজনের মৃত্যু হয়। তার আগের দিন বৃহস্পতিবার জেলার বুড়িচং ও দেবিদ্বারে পৃথক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই কলেজ ছাত্র এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তার। তার আগেরদিন জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুরে ট্রেনে কাটা পড়ে তিন স্কুল ছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ বলছে, দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহনের চালক ও জনসাধারণ উভয়কে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে ও শনিবার সকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে  শনিবার সকালে দ্রুতগামী যাত্রীবাহী বাসের চাপায় সিরাজ খান নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন। এর আগে শুক্রবার রাতে ট্রাক্টর চাপায় আলমগীর হোসেন নামের আরও এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত আলমগীর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সেনেখীল গ্রামের মৃত আবদুল ওয়াহাবের ছেলে। নিহত সিরাজ খান নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চমির মুন্সির গ্রামের বাসিন্দা। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মিয়াবাজার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন।
এর আগে শুক্রবার (১১ মার্চ) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় কুমিল্লাগামী বেপরোয়া একটি প্রাইভেটকার দুই পথচারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই এক শিশুসহ দুইজনের মৃত্যু হয়। নিহতরা হচ্ছে- জেলার বুড়িচংয়ের শাহ দৌলতপুর এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে রবিউল (১৬) এবং একই এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে আনিস (৫)।
তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবিদ্বার উপজেলার বেগমাবাদ এলাকায় মোটরসাইকেলে করে দুই কলেজছাত্র বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় সুগন্ধা পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় অপরজনকে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় নেওয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- রবিউল ইসলাম (২০) ও সজিব হোসেন (১৯)। রবিউল দেবীদ্বার পৌরসভার চেয়ারম্যান বাড়ির আর সজিব উপজেলার বড় আলমপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
একই দিন সকাল ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে করে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের দিকে যাচ্ছিলেন আবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মো. দিদার হোসেন (৪৫)। মহাসড়কের নাজিরা বাজার এলাকায় তিশা পরিবহনের একটি বাস তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়েন। এসময় স্থানীয়রা দিদারকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে বুধবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর রেলক্রসিং দিয়ে তিন বান্ধবী একসঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিল। এসময় চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মীম ও রিমার মৃত্যু হয়। তাসফিয়া ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে ছিটকে পড়ে সেও মারা যায়। পরে উত্তেজিত জনতা রেললাইন ও কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে।
নিহতরা সবাই বিজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার মধ্যে নিহত মীম কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মো. মাসুম মিয়ার মেয়ে, রিমা একই এলাকার রিপন মিয়ার মেয়ে এবং তাসফিয়া ওই এলাকার রোজিনা আক্তারের মেয়ে।