নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ডে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়ে পণ্য না নিয়েই ফিরে এসেছেন শতাধিক কার্ডধারী। দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে ফেরত যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। আবার একই পরিবারের সদস্যরা ৪/৫টি কার্ড পাওয়া, আবার অনেকে কার্ড না পাওয়া নিয়েও হতাশা প্রকাশ করছেন অনেকে। রবিবার দুপুরে নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে ফ্যামিলি কার্ডধারীরদের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া যায়।
রবিবার (২০ মার্চ) থেকে কুমিল্লা নগরীর ২৩টি স্থানে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। সকাল থেকেই প্রতিটি স্থানে কার্ডধারী মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। রোদে পুড়ে, লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য ক্রয় করেন সুবিধাভোগীরা।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ১৩,১৪,১৫ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর নুরজাহান আলম পুতুল অভিযোগ করে বলেন, আমার দেওয়া কার্ড প্রাপ্তদের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনের টিসিবি’র ট্রাক থেকে ফেরত দেওয়া হয়েছে- তালিকায় তাদের নাম নেই বলে। টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে ফেরত আসা উত্তেজিত শতাধিক ব্যক্তি আমার বাসার সামনে এসে জড়ো হয়। আমি তাদের কোন সদোত্তর দিতে পারিনি। তারা কবে পণ্য কিনতে পারবে সেটাও জানা যায়নি। বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহীকে জানিয়েছি।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, যারাই কার্ড পেয়েছেন তারাই এই পণ্য কেনার সুবিধা পাবেন। কারো কোন অভিযোগ থাকলে আামাকে লিখিত অভিযোগ জানালে- আমি সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো।
নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুরাদপুর বটতলা এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব কলি বেগম জানান, বয়স্ক মানুষ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে টিসিবির পণ্য ক্রয়ে হাউজিং এস্টেট গিয়েছিলেন সকাল সাড়ে আটটায়। দীর্ঘ লাইন শেষে পণ্য ক্রয় করতে গেলে তালিকায় নাম নেই বলে তাকে পণ্য দেওয়া হয়নি। রোদে দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে পন্য না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
মুরাদপুর এলাকার বাসিন্দা নুরু মিয়া বলেন , ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর থাকেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তার বাসা সংলগ্নে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করায় অনেক বয়স্ক প্রতিবন্ধী লোকদের দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে যেতে হয়। আমাদের ওয়ার্ডে শেষ প্রান্তে অন্য ওয়ার্ডের সীমায় কেন্দ্রটি স্থাপন করায় আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এ কেন্দ্রটি যেন ওয়ার্ডের মধ্যস্থানে স্থাপন করা হয়।
আরেক বাসিন্দা আব্দুল জলিল জানান, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের দেওয়া কার্ড প্রাপ্ত সকলকে ফেরত দেওয়া হচ্ছে তাদের নাম তালিকায় নেই বলে। আবার অনেকের কার্ড নাম্বারের রয়েছে গড় মিল। তারা দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করে ফেরত আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
মোঃ ইদ্রিস মিয়া বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছ থেকে টিসিবির পন্য ক্রয়ের কার্ড সংগ্রহ করেছি। আমাদের আজকে পন্য ক্রয় করতে বলা হয়েছিলো। তিনি বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র দোকানি। দোকান বন্ধ করে পন্য ক্রয় করতে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে পার হয়ে ফেরত আসতে হয়েছে। আমার কার্ড আছে। তালিকায় নাকি নাম নাই।
নগরীর বউবাজার এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের প্রতিবেশি একই পরিবারের চারজন কার্ড পেয়েছে। অথচ আমাদের পরিবারের কেউ কার্ড পায়নি। আবার একজনের নাম দুবার ও তালিকায় রয়েছে।
১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেলিম খান বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে ডিলারদের কাছে পণ্য ও তালিকা দেওয়া হয়েছে। এখানে অনেকের তালিকা বাদ পড়ায় মানুষ এসে ভোগান্তিতে পড়েছে। তালিকার নামের বিষয়ে আমার কিছু করার নাই। আমি শুধু তদারকি করছি।
পণ্য বিক্রয়ের এজেন্ট মের্সাস দিবা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মোহাম্মদ আরিফুল হক বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছে। বাদ পড়া বিষয়টি আমাদের না।