Published : Friday, 1 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 09.04.2022 5:07:43 PM
তানভীর দিপু:
কুমিল্লার
বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্তত ৩০ শতাংশ মোটরসাইকেলে। ভারী কিংবা
যাত্রীবাহী যানবাহনের সাথে সংঘর্ষেই কিংবা নিয়ন্ত্রন হারিযে ঘটে থাকে এসব
দুর্ঘটনা। পুলিশ এবং মোটরসাইকেলিস্টরা জানান, মহাসড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়
কবলিত হলে চালক এবং আরোহীদের প্রাণে বাঁচার সম্ভাবনা খুবই। যার প্রাণে
বেঁেচ যান তাদের বেশির ভাগকেই আজীবন পঙ্গুত্ব বরন করতে হয়।
সর্বশেষ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বেলতলী এলাকায় অজ্ঞাত গাড়ি চাপায়
ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল ৩১ মার্চ
সন্ধ্যায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেল ও মরদেহগুলো ময়নামতি
ক্রসিং থানা হাইওয়ে পুলিশ উদ্ধার করেছে।
হাইওয়ে পুলিশ সুপার- কুমিল্লা
অঞ্চল কার্যালয় এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে গত তিন মাসে অন্তত ৩৫ টি
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার
সংখ্যা অন্তত ৯টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১২ জন।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে মোট দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ৩০ শতাংশই মোটরসাইকেলে
সংঘটিত।
হাইওয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোঃ রহমত উল্যাহ জানান,
মোট সড়ক দুর্ঘটনার ২৫ থেকে ২৮ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এই দুই চাকার
যানে দুর্ঘটনা প্রাণহানির সংখ্যাও বেশি। গতি নিয়ে সচেতনতা এবং ব্যাক্তিগত
নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলেই দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমিয়ে আনা সম্ভব।
কুমিল্লার
ফিউরিয়াস মটো ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং মোটরসাইকেলিষ্ট মালেক খসরু উষা
জানান, মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় কবলিত বাইকার ও আরোহীদের মৃত্যুর হার অন্তত
৮০ শতাংশ। মহাসড়কেই দুই চাকার এই যান দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয় বেশি। উল্টোপথে
যান চলাচল, নিয়ন্ত্রনহীন গতি, শরীরে হেলমেটসহ নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহারে
অনীহা, অতিরিক্ত যাত্রীবহন এবং ট্রাফিক আইন না মেনে চলার কারনেই এসব
দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গতি ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মোটরসাইকেল নিয়ে
মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করা গেলে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির সংখ্যা কমিয়ে আনা
সম্ভব। এজন্য বাইকার, অভিভাবক, পুলিশ ও সড়ক বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টা
প্রয়োজন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়কের বুড়িচংয়ের কাবিলা এলাকায় ট্রাক চাপায় প্রাণ হারায় মোটর সাইকেল
আরোহী জসিম উদ্দিন। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নাজিরাবাজার
এলাকায় লরি চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী। ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে গোমতী নদীর পার
এলাকায় মৃত্যুবরন করে মোটরসাইকেল আরোহী এক কলেজ ছাত্র। টমছমব্রীজে মোটর
সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যাক্তি ৩ মার্চ মৃত্যুবরন করেন। ৭ মার্চ
দেবিদ্বারে সড়ক ট্রাক চাপায় বাই সাইকেল আরোহী এনজিও কর্মীর মৃত্যু। ১০
মার্চ দেবিদ্বারে বাস চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই জন এবং বুড়িচংয়ে বাস
চাপায় মোটর সাইকেল আরোহী এক অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। ২২
মার্চ চৌদ্দগ্রামে ১ জন মোটর সাইকেল আরোহী নিহত হন। সর্বশেষ ৩১ মার্চ ঢাকা
চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায় অজ্ঞাত গাড়ি চাপায়
স্বামী-স্ত্রী দু’জন নিহত হয়েছেন।