Published : Friday, 8 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 08.04.2022 12:48:51 AM
মো: হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ||
একের
পর এক প্রাণঘাতি দুর্ঘটনায় ‘মরণ ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে কুমিল্লা-সিলেট
আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ। মহাসড়কের ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট থেকে
কালামুড়া ব্রিজ পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই অংশে গত এক বছরে দুর্ঘটনায়
প্রাণ হারিয়েছে ২৩ জন। এছাড়াও এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৯ জন; যার মধ্যে
অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করে অভিশপ্ত জীবনযাপন করছেন। একটি দুর্ঘটনার
রক্তের দাগ শুকানোর আগেই আরেকটি তাজা প্রাণের রক্তে লাল হচ্ছে সড়ক। বাড়ছে
লাশের মিছিল। চোখের পলকে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কারণে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর
হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। এ মিছিলে শামিল হচ্ছে ছাত্র, চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ীসহ
নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। সরু-আকাঁবাকা রাস্তা, প্রচুর গাড়ির চাপ, অদক্ষ
চালকের বেপরোয়া গতি ও আইনের যথেষ্ট প্রয়োগ না থাকা-ই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ
বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন এ সড়কে
হাজারো পণ্যবাহী গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেটসহ
আশ-পাশের বিভিন্ন জেলাসমূহে যাতায়াত করে থাকে। সড়কের ১৫ কিলোমিটার এলাকায়
গত দেড় মাসে ছয়টি দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৭ জন। গত ১০ মার্চ বেগমাবাদ বাজার
মোড়ে সুগন্ধা বাসের চাপায় কলেজ ছাত্র রবিউল ও তার বন্ধু সজিব নিহত হওয়ার পর
৬ এপ্রিল বুধবার বেগমাবাদে সিএনজি চালিত অটো রিকশার ধাক্কায় মটর সাইকেল
আরোহী এক যুবক (৩৫) নিহত হয়েছে।
এ সড়কের নিয়মিত যাত্রীরা জানান,
কুমিল্লা-সিলেট মহা-সড়কের ৪২ কিলোমিটার এলাকার বেশির ভাগ জায়গায় সড়কের দুই
পাশে মাটি নেই, ফুটপাত নেই, সরু ও আকাঁবাকা রাস্তায় নিষিদ্ধ ট্রাক্টরের
অবাধ বিচরণ, যততত্র অটোরিকশা পার্কিং, যানবাহনের বেপরোয়া গতিই দূর্ঘটনার
জন্য দায়ী। তাদের দাবি সড়কের প্রসস্ততাসহ বিশৃংঙ্খলা রোধে দায়িত্বশীলদের
মূল কাজের প্রতি আন্তরিক হতে হবে।
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)
কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট কামরুজ্জামান বাবুল বলেন, সড়কের
অপ্রসস্ততা, অদক্ষ চালক, অভারলোডিং যানবাহন, নিষিদ্ধ ট্রাক্টর ও যেখানে
সেখানে থ্রী হুইলার পাকিং দূর্ঘটনার মূল কারণ। সড়কের এসব সমস্যা সমাধান করে
পুরো সড়ক ট্রাফিক নিয়ম কানুনের মধ্যে আনলে হয়তো দূর্ঘটনা কমে আসতে পারে।
মিরপুর
হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ আলম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশ
কয়েকটি স্থানে চেক পোস্ট বসিয়ে গাড়ির চালকদের লাইসেন্স, গাড়ির ফিটনেস ও
কাগজপত্র যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। যাদের লাইসেন্স বা গাড়ির কাগজপত্র নেই
তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে।