নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। আর এ উপলক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও নিবিড় ও বেগবান করার অঙ্গীকার করেছেন দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গতকাল সোমবার সকালে সিঙ্গাপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের কূটনৈতিক বৈঠকে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান নিজ নিজ সরকারের পক্ষে এ বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) মো. নাজমুল হুদা, পরিচালকসহ (পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দপ্তর) হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিঙ্গাপুর সরকারের পক্ষে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া উইংয়ের মহাপরিচালক গিলবার্ট ওহ্ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লোহ্।
করোনা মহামারি শুরুর পরে বন্ধুপ্রতীম দু’দেশের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ে এটাই প্রথম বৈঠক। সিঙ্গাপুর সরকারের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন তিনদিনের সরকারি সফরে বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে এবং আসিয়ান ফোরামে সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করতে সিঙ্গাপুর সরকারের সহায়তা চেয়েছেন। এ বিষয়ে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় ক্ষেত্রেই তার সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা জানান।
সম্প্রতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বিশেষ পুরস্কার চালু করেছে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সিঙ্গাপুর। এ জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন সিঙ্গাপুরের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দ্রুত চলমান ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট বিষয়ক সমঝোতা সমাপ্ত করে এ চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করা, ছাত্র ও পেশাদার পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্কলারশিপ ও বৃত্তি চালু, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের কৃষিজাত পণ্যের রফতানি বাড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত ও স্বার্থসংরক্ষণসহ দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চলতি বছরে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও দ্রুত বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।