এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
কুমিল্লার
দেবীদ্বার পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার অপরিকল্পিত ‘উন্নয়নের স্রোতে বন্দী’
পৌর এলাকার মানুষ। দির্ঘদিন চলমান ড্রেন সংস্কারের কারণে উপজেলা সদরের
চলাচলের মূল সড়কগুলোও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল
ফিতরকে ঘিরে বাড়ি ফেরা মানুষ ও হাট-বাজার-শপিংমলে যাতায়তকারীদের পড়তে হচ্ছে
চরম বিড়ম্বনায়।
বিশেষ করে দেবীদ্বার পৌর এলাকার অন্যতম ব্যাস্ত সড়ক
দেবীদ্বার কলেজ রোড, হাসপাতাল রোড, শান্তিরোডের অবস্থা খুবই নাজুক।
খানাখন্দ বাসাবাড়ি, দোকানপাঠ, হাসপাতালের বর্জের দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে
মানুষের জীবন। এমনকি উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের প্রধান ফটকের সামনের
অবস্থা দেখলে মনে হয় এটাই পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলার ডাম্পিং সেন্টার।
জানা
গেছে, কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২০ বছরেও ময়লা আবর্জনা ফেলার
কোন ডাম্পিং সেন্টার তৈরী হয়নি। যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা।
দুর্গন্ধ আর খানাখন্দের মাঝে চলাচল করতে হচ্ছে হাজার হাজার স্কুল, কলেজ,
মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং অফিস ও হাট-বাজারগামী লোকজনের।
পৌরসভা
প্রতিষ্ঠার ২০ বছরের মধ্যে মামলা জটিলতায় পৌর পিতার চেহারার দেখা মেলিনি।
অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও অব্যবস্থায় জনদুর্ভোগের সীমা নেই দেবীদ্বার
পৌরসভাবাসীর।
গত গত ৭/৮ মাস ধরে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
থেকে নিউমার্কেট, উপজেলা প্রশাসনিক রোড, কলেজ রোড হয়ে ইকরানগরী ব্রীজ
পর্যন্ত ৩ হাজার ৫ শ’ গজ ড্রেন সংস্কার কাজ চলছে। কার্যাদেশে নির্ধারিত সময়
অতিবাহিত হলেও ২০ শতাংশ কাজ এখনো বাকী রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের ৯
ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে ২ কোটি ৯০ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে দেবীদ্বার
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেইট থেকে ইকরানগরী ব্রিজ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫ শ’
গজ পাকা ড্রেন সংস্কার কাজ চলছে। ড্রেনের কোথাও কোথাও ৩ থেকে ৪ ফুট
প্রশস্তকরণের কথা রয়েছে। কাজটি করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান “মাম কনস্ট্রাকশন
হাউজ স্টেট, কুমিল্লা। ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশের সময়সীমা ছিল ৯
ফেব্রুয়ারি ২০২২ ইং থেকে চলতি বছরের ১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু এর মধ্যে ২
হাজার গজের কিছটুা বেশি কাজ শেষ করলেও ৮-৯শ’ গজ কাজ এখনো শেষ হয়নি।
ব্যবসায়ী
বাচ্চু মিয়া বলেন, ঠিকাদার দিনে ২ ঘন্টা কাজ করলেও বাকী সময়টা এভাবেই কাজ
পড়ে থাকে। মাসের পর মাস পথচারী ও যাত্রী এমনকি আমরা যারা ব্যবসায়ি আছি
তাদের দূর্ভোগের অন্ত থাকেনা। এ দুর্ভোগ- নির্বাচিত নগরপিতার অভাব,
প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা ও সঠিক তদারকীর অভাবে হয়ে আসছে। সামান্য বৃষ্টিতে
সড়ক এবং ড্রেন একাকার হয়ে যায়। পথচারীরা স্লেভ বিহিন ড্রেনের উপরদিয়ে
যাওয়ার সময় ড্রেনে পড়ে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
তবে কবে নাগাদ এ
দূর্ভোগ নিরসন হবে তা পৌর প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টরা কেউ বলতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে কথা বলা
সম্ভব হয়নি।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে
জনদুর্ভোগ নিরসন হবে কিনা জানতে চাইলে- পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জাহিদ
হাসান জানান, কাজ এখনই শেষ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই; উপরন্ত ঈদুল ফিতরকে
কেন্দ্র করে ছুটির কারনে কাজ বন্ধ থাকবে আরো ২০/২৫ দিন। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার
প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হলেও বৃষ্টিজনিত কারনে আরো
৫ মাস কাজের টাইম এক্সষ্টেনশন করা হয়েছে। অতএব এসময়টা পৌরবাসীকে ধৈর্যসহ
একটু কষ্ট সহ্য করতে হবে।