Published : Sunday, 24 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 24.04.2022 1:05:22 AM
প্রিয়
নবী (স.) মাহে রমজানের যেই ফজিলত বর্ণনা করেছেন তার মধ্যে রমজানের রাত
গুলির মধ্য হতে একটি রাত-যাকে লাইলাতুল কদর বলা হয়। যা খুবই বরকত ও
কল্যাণের রাত। পবিত্র কালামে পাকে ঐ রাতকে হাজার মাস হতে উত্তম বলা হয়েছে।
হাজার মাসে তিরাশি বছর চার মাস হয়। অত্যন্ত ভাগ্যবান ঐ ব্যক্তি যার এই রাতে
ইবাদত করার তাওফিক হয়। যেই ব্যক্তি এ রাতে ইবাদতে কাটাল সে যেন তিরাশি বছর
চার মাসের বেশি সময় ইবাদতে কাটাল। আর এই বেশির পরিমাণ কতটা তা একমাত্র
আল্লাহ তা’আলা জানেন। এই মোবারক রাত্রিতে ইবাদত যাদের ভাগ্যে জুটেছে তারা
বাস্তবিকই ভাগ্যবান। আল্লাহতালা আপন মেহেরবাণিতে তাদেরকে বিরাট নেয়ামত দান
করেছেন। দূররে মনসুর কিতাবে হযরত আনাছ (রা.) হতে বর্ণিত রাসুল (স.) এরশাদ
করেন যে- আল্লাহ তা’আলা লাইলাতুল কদর একমাত্র আমার উম্মতকে দান করেছেন।
পূর্ববর্তী উম্মতগণ তা পায়নি। কি কারণে এই নেয়ামত দান করা হয়েছে- এই
ব্যাপারে একাধিক বর্ণনা রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো রাসুল (স.) যখন দেখলেন
পূর্ববর্তী উম্মতগণ দীর্ঘ হায়াত পেয়েছেন, সেই তুলনায় আমার উম্মতের হায়াত
খুবই কম। এই অবস্থায় যদি কেউ তাদের সমান নেক আমল করতে চায় তা সম্ভব নয়,
হায়াত কম হওয়ার কারণে। বিষয়টি চিন্তা করে প্রিয় রাসুল (স.) উম্মতের জন্য
অনেক পেরেশান হলেন, কষ্ট পেলেন। রাসুল (স.) এর সেই পেরেশানি দূর করা এবং
উম্মতে মুহাম্মদীর ক্ষতি পূরণের জন্যই এই রাত্র আল্লাহতালা আমাদেরকে দান
করেছেন। যদি কোন ভাগ্যবান ব্যক্তি দশটি লাইলাতুল কদর পায় আর সে ঐ
রাত্রিগুলিকে ইবাদতে কাটায় তবে সে যেন আটশত তেত্রিশ বছর চার মাসের ও অধিক
সময় পুরোপুরিভাবে ইবাদতে কাটায়। আল্লাহ তা’আলা কালামেপাকে স্বতন্ত্র একটি
সূরা নাযিলের মাধ্যমে এই রাতের ফজিলত বর্ণনা করেছেন। যার অর্থ হল, নিশ্চয়
আমি এই কোরআনকে কদরের রাতে নাজিল করেছি। অর্থাৎ কোরআনে পাক লাওহে মাহফুজ
হতে এই রাতে দুনিয়ার আসমানে নাযিল করেছেন।
দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ তা’আলা
এরশাদ করেন- আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কি? অর্থাৎ এই রাতের ফজিলত কি
আপনার জানা আছে? তারপর আল্লাহপাক নিজেই এরশাদ করেন- লাইলাতুল কদর হল হাজার
মাস হতে উত্তম। অর্থাৎ হাজার মাস ইবাদত করলে যে পরিমাণ ছাওয়াব হবে এক
লাইলাতুল কদরে ইবাদত করলে তার চাইতে বেশি ছাওয়াব হাছিল হবে। এই রাতে
ফেরেশতাগণ অবতীর্ণ হন এবং এই রাত্রিতে রুহুল কুদুস অর্থাৎ জিবরাঈল (আ.)ও
অবতরণ করেন। ফেরেশতাগণ তাদের পরওয়ার দিগারের হুকুমে প্রত্যক ভাল ও কল্যাণের
বিষয় নিয়ে জমিনে অবতরণ করেন। এই রাতটি শুরু হতে শেষ পর্যন্ত সালাম ও
শান্তি। এই রাতের উল্লেখিত বরকত সমূহ সুবহে সাদিক পর্যন্ত। এই রাতের ফজিলত
আল্লাহতালা আমাদের সকলকে দান করুন। আমিন।