ইসমাইল নয়ন।।
ব্রাহ্মণপাড়ায়
সরকারি খাল দখল করে মাছ চাষ করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চারাধারী এলাকার ১০-১৫ জন
প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এলাকায় বসবাসকারী
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া ঘুঙুর নদীর একটি শাখা খাল (
মরা গাঙ) জবরদখল করে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার অংশে নিজেদের জায়গার সাথে
মিলিয়ে পুকুর খনন করে দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছে ঐ এলাকার কিছু
প্রভাবশালী লোকজন।
এ ব্যপারে একই এলাকার বাসিন্দা মৃত মালেক সরকারের
ছেলে মোঃ বাবুল সরকার বলেন, চারাধারী এলাকার মৃত ছাফর আলীর ছেলে নুরু মিয়া ও
রুমু মিয়া, তাজুল ইসলাম, রুছমত আলী মেম্বার, মঞ্জুর আলী, মোস্তফা, জয়নাল
হোসেন, সুলতান, রশিদ, মাহমুদ আলী, অহিদ মিয়াসহ তাদের সহযোগীরা। তারা দীর্ঘ
১৫ বছর যাবৎ এই সরকারী খাল দখল করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে ফিশারী করে
মাছ চাষ করছে। এতে করে একদিকে যেমন খাল দখল হয়ে গেছে অন্যদিকে পানির অভাবে
ফসল করা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট এলাকায়। কৃষিপ্রধান দেশে কৃষকরা পানির অভাবে
সঠিকভাবে ফসল করতে পারছে না। তিন ফসলের জায়গায় মাত্র এক ফসল করতে হচ্ছে।"
এব্যাপারে
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আগে খালে পানি থাকায় সবসময় ফসল করা গেছে। তিন ফসল
আউশ, আমন ও বোরো ধানের ফসল ঘরে উঠানো গেছে। কিন্তু বর্তমানে খালটি
প্রভাবশালীদের দখলে গিয়ে ফিশারীতে পরিণত হওয়ায় কৃষকেরা তিন ফসল ফলানো থেকে
বঞ্চিত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে,
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের চান্দলা ৪ নং ওয়ার্ড
চারাধারী এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘুঙুর নদীর একটি শাখ খাল এর অংশবিশেষ
স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন অবৈধভাবে দখল করে দীর্ঘদিন যাবত মাছ চাষ করে
আসছে।
এ বিষয়ে ঐ এলাকার বাসিন্দা হাজী মোঃ খোরশেদ আলম, আব্দুল কুদ্দুছ,
খলিল মিয়া, ইব্রাহীম, রবিউল, বিল্লাল জানান, ১০০ ফুট খালের জায়গাটি এখন
প্রভাবশালী মহল নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে ১০-১২ টি ফিশারী করে মাছ চাষ
করছে। খালটি এখন দখল হয়ে গেছে। ফসল করতে গেলে এখন বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির
জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আগে তিন ফসল করতে পারতাম। এখন ভালোভাবে এক ফসল করতে
পারি না। পানির অভাবে ফসল করতে না পারায় খাবারের কষ্ট পেতে হচ্ছে। সরকার
কৃষির উপর জোর দিয়েছে। আর এদিকের প্রভাবশালীদের আধিপত্য খাল দখল হয়ে গেছে।
ফিশারী করার কারনে রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। এতে করে চলাচল করতে দূর্ভোগ
পোহাতে হচ্ছে। শিশু, বয়ষ্ক, চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া আগে খালে
গোসল করা হতো। দখল হওয়াতে খালে গোসল করা যাচ্ছে না। গরু ছাগলকেও গোসল করাতে
কষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ নুরু মিয়া ও রুমু মিয়া, তাজুল ইসলাম, রুছমত
আলী মেম্বার, মঞ্জুর আলী, মোস্তফা, জয়নাল হোসেন, সুলতান, রশিদ, মাহমুদ
আলী, অহিদ মিয়াসহ তাদের সহযোগীরা এই খাল দখল ৮-১০ টি ফিশারী করে মাছ চাষ
করে আসছে। প্রভাবশালী হওয়ায় তারা সবাইকে হুমকি দিয়ে রাখে। কেউ কিছু বললে
হামলা মামলা করার হুমকি দেয়। এতে এলাকায় বসবাসকারীরা নানা ভয়ভীতিতে থাকে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলো দাবী করে বলেন, প্রশাসনের কাছে অনুরোধ এই খাল যেনো
পুনরুদ্ধার করে আগের মতো পানি চলাচলের ব্যবস্থা করে। এতে আমাদের কষ্ট লাঘব
হবে। ফসল করা যাবে। এতে করে কৃষি প্রধান দেশে বাঁচবে কৃষি, বাঁচবে কৃষক।