বুড়িচংয়ে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে মাটি কাটার মহোৎসব
Published : Thursday, 28 April, 2022 at 12:00 AM
সৌরভ মাহমুদ হারুন, বুড়িচং ||
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে চলছে অপরিকল্পিত ভাবে মাটি কাটা। এতে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ড্রেজার দিয়ে প্রতিনিয়ত কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী চক্র।
সরেজমিনে উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের আবিদপুর পশ্চিমপাড়া মদিনা মসজিদ সংলগ্ন বড় পুস্কনি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার ফলে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এক স্থানে অপরিকল্পিত ভাবে গভীর গর্ত করার কারণে চারপাশের মাটি দেবে ভেঙ্গে পড়ছে ড্রেজারের গর্তের মধ্যে। অভিযোগ রয়েছে কোরপাই গ্রামের শাহজাহানের নেতৃত্বে কয়েকজনের একটি চক্র বিভিন্ন এলাকায় জোর পূর্বক ড্রেজার মেশিন স্থাপন করে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রয় করে দিচ্ছে।
ড্রেজারের কাটা মাটি মাইলের পর মাইল পাইপ সংযোগ দিয়ে চলছে পকুর কিংবা অন্য ফসলি জমি ভরাটের কাজ। অবৈধ ড্রেজিংয়ের কারণে ৫০/৬০ ফুট গভীর থেকে মাটি ও বালি উত্তোলনের কারণে আশ-পাশের তিন ফসলের জমিগুলো কূপে পরিণত হচ্ছে। এতে করে পরিবেশ ভারসম্য হারাচ্ছে।
এছাড়া মিথলমা গ্রামের নাগীনী জালাশয় থেকে প্রশাসনের দোহাই দিয়ে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটছেন শাহজাহান, মোকাম ইউনিয়নের বারাইর দীঘি থেকেও ড্রেজারের মাধ্যমে কাটা হচ্ছে মাটি, শিকারপুর এলাকার বিভিন্ন ফসলী জমি থেকে অবাধে ড্রেজারের সাহায্যে মাটি কাটছে অসাধূ ব্যক্তিরা।
অপরদিকে পীরযাত্রাপুর ইউনিয়ন এর উত্তর শ্যামপুর গ্রামের মনির হোসেন মনু ও তার ছেলে সুমন এলাকায় একাধিক ড্রেজার মেশিন চালিয়ে একই কায়দায় মাটি ও বালু উত্তোলন করে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত করছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে জরিমানা করলে সে আবার পুরো দমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধ এই ড্রেজার।
এ বিষয়ে মোকাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী বলেন, শুধুমাত্র শিকারপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের জন্য একটি পুকুর থেকে মাটি কাঁটা হচ্ছে। বাকী স্থানের ড্রেজারের বিষয়ে আমি অবগত নাই। যেহেতু বিষটি শুনলাম আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন বলেন, অবৈধ ভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের জেল জরিমনাও দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এক শ্রেণির অসাধু লোক প্রশাসনের উপর নজরদারী রেখে এ কাজ করে যাচ্ছে। অভিযানের খবর দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের কাছে পৌছে যায়, ফলে প্রশাসন পৌছানোর পূর্বেই পালিয়ে যায় তারা। তাই এ বিষয়ে মাসিক আইনশঙ্খলা সভায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেন স্থানীয় ভাবে তারা অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করেন।