Published : Friday, 29 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 29.04.2022 1:21:33 AM
যাকাত
ইসলামী জীবন বিধানের অন্যতম মূলভিত্তি (বুনিয়াদ) ও অবশ্য পালনীয় (ফরয)
ইবাদত। ইসলামের বুনিয়াদের মধ্যে ঈমান, নামাজ, রোজা সকল মুসলমানের জন্যই
অবশ্য পালনীয়। কিন্তু হজ ও যাকাত শুধুমাত্র অর্থ সম্পদের দিক দিয়ে
সামর্থ্যবান মুসলমানদের উপর ফরয। আর্থিক সামর্থবান বলতে যাকাতযোগ্য সম্পদের
মালিক হওয়াকে বুঝায়। 'যাকাত' আরবী শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে পবিত্রতা,
ক্রমবৃদ্ধি, আধিক্য ইত্যাদি। পারিভাষিক অর্থে, যাকাত বলতে ধনীদের ধন ও মালে
আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত অংশকে বুঝায়। বস্তুত যাকাত হচ্ছে
সম্পদশালীদের সম্পদে আল্লাহর নির্ধারিত সেই ফরয অংশ যা সম্পদও আত্মার
পবিত্রতা অর্জন, সম্পদের ক্রমবৃদ্ধি সাধন এবং সর্বোপরি আল্লাহর রহমত লাভের
আশায় নির্ধারিত খাতে ব্যয় বন্টন করার জন্য দেওয়া হয়। যাকাত একদিকে যাকাত
দাতার ধন-সম্পদকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে এর প্রবৃদ্ধি সাধন করে- অন্যদিকে
দরিদ্রদের আর্থিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে। যাকাতের এই প্রবৃদ্ধিও পবিত্রতা
কেবল ধনমালের মধ্যেই সীমিত নয় বরং যাকাত দানকারীর মনমানসিকতা ও ধ্যান-ধারনা
পর্যন্ত তা পরিব্যাপ্ত হয়। যাকাত ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মেরুদণ্ড।
ইসলামী অর্থনীতির অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট হচ্ছে এটি সম্পদের সুষম বন্টনের উপর
গুরুত্বারোপ করে। সম্পদের এ সুষম বন্টনের জন্য ইসলাম যে সকল ব্যবস্থা
মানুষকে উপহার দিয়েছে, তার অন্যতম হচ্ছে যাকাত। মানুষের হাতে সম্পদ
পুঞ্জিভূত হয়ে পড়লে সমাজে ব্যাপক অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দেয়। ফলে মানুষের
অভাব অনটন বেড়ে যায়। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে, মানুষের নৈতিক চরিত্রের
বিপর্যয় ঘটে। এসব সমস্যা থেকে মানব জাতিকে রক্ষার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা’আলা
প্রত্যেক ধনী মুসলমান ব্যক্তির উপর যাকাত অবশ্য পালনীয় তথা ফরযরূপে
নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সম্পদ পুঞ্জিভূত থাকুক আল্লাহতালা তা পছন্দ করেন না।
তিনি চান এটি মানুষের কল্যাণে ব্যয় হোক। ইসলামী সমাজে সম্পদ পুঞ্জিভূত করে
রাখা যাবে না, এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। যাকাতের মাধ্যমে
আল্লাহতালা ধনিদের সম্পদে গরিবদের হক নির্ধারণ করে দিয়েছেন এটি গরিবদের
অধিকার। তাদের প্রতি করুনা নয়। যাকাত আদায়ের মাধ্যমে এ হক আদায় করতে হবে।