ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে হত্যা, চারজনের যাবজ্জীবন
Published : Wednesday, 18 May, 2022 at 12:37 PM
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে হত্যা, চারজনের যাবজ্জীবনলক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় মাদরাসাছাত্রী রোজিনা আক্তারকে ধর্ষণের চেষ্টা ও হত্যার দায়ে ৪ আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার (১৮ মে) বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রায়পুর পৌরসভার দেনায়েতপুর এলাকার মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে কইলা, একই এলাকার আবদুল মতিনের মেয়ে আখি, দেনায়েতপুর এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে হুমায়ুন কবির ও উপজেলার বামমী ইউনিয়নের বামনী গ্রামের মৃত মোস্তফা মিয়ার ছেলে মো. বাহার। এর মধ্যে হুমায়ুন ও বাহার পলাতক রয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, ভিকটিমকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়৷ একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে আসামিরা। আদালতে ঘটনাটি প্রমাণিত হয়েছে। এতে আদালত আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।

পিপি আরও বলেন, রায়ের সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আনোয়ার হোসেন কইলা ও আখি আক্তার রুমা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হুমায়ুন ও বাহার পলাতক রয়েছেন। এরমধ্যে বাহার শুরু থেকেই পলাতক। আর হুমায়ুন জামিনে গিয়ে পলাতক।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী শাকিল পাটওয়ারী বলেন, মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। ঘটনার প্রত্যক্ষ কোনো সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত রোজিনা রায়পুর পৌরসভার দেনায়েতপুর এলাকার বয়াতি বাড়ির মৃত সফিক মিয়ার মেয়ে ও হযরত খাদিজাতুল কোবরা নুরানী মহিলা মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। পরীক্ষা শেষে ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর বিকেলে তিনি বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় সাবেক পৌরসভা কার্যালয় ভবনের সামনের সড়কে কথিত প্রেমিক আনোয়ার হোসেন কইলার সোর্স আখি অপেক্ষা করছিলেন। একপর্যায়ে ফুসলিয়ে আখি তাকে বাগানের দিকে নিয়ে যান।

কইলার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে আখি এ সহযোগিতা করেন। সেখানে কইলাসহ আরও তিন সহযোগী ছিলেন। একপর্যায়ে কইলা ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সে প্রত্যাখ্যান করলে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পরে অন্যদের সহযোগিতায় গাছের সঙ্গে গলার ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাগানে মরদেহ ফেলে রাখা হয়। পরদিন দুপুরে স্থানীয় লোকজন মরদেহটি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। তার পরিবারের লোকজন এসে মরদেহটি শনাক্ত করে।

এ ঘটনায় ছাত্রীর মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযান চালিয়ে ১৭ ডিসেম্বর পশ্চিম কেরোয়া এলাকা থেকে আখি ও হুমায়ুন নামে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৮ ডিসেম্বর ঘটনা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় তারা লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মো. দাঊদ হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২০১৬ সালের ১৮ জুন পুলিশ আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।