ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কুড়িগ্রামে বন্যা, ‘৫০ হাজার’ মানুষ পানিবন্দি
Published : Wednesday, 15 June, 2022 at 12:00 AM
ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন।
জেলার জিঞ্জিরাম, কালো ও ধরণী নদীতে অস্বাভাবিক পানিবৃদ্ধির ফলে রৌমারী ও চর রাজীবপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে রৌমারী ও চর রাজীবপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৪৫টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ৩০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক। পাঠদান বন্ধ হয়েছে ৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
তাছাড়া ২৮৩ হেক্টর ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
গত সাত থেকে আট দিন ওই এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।রৌমারী-ঢাকা সড়কের পূর্ব অংশে বন্যা পরিস্থিতি থাকলেও পশ্চিম অংশের ব্রহ্মপূত্র, হলহলিয়া ও সোনাভরি নদী অববাহিকায় এখনও বন্যা হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে হঠাৎ এমন পরিস্থতির সৃষ্টি হওয়ায় বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছেন।
রৌমারীর যাদুরচর ইউনিয়নের খেয়ারচর গ্রামের দিনমজুর নজির হোসেন বলেন, “পানিত বেরবার পারি না। বেরোলেই খরচ। কাজ কাম নাই। আয় উন্নতি বন্ধ। খুব সমস্যাত আছি।”
পানি ভেঙে বাতেন মিয়া খেয়ারচর হাটে ডিম বিক্রি করতে যান। বৃষ্টিতে লোকজন না থাকায় অবিক্রিত ডিম নিয়েই বাড়ি ফেরেন তিনি।
বকবান্ধা ব্যাপারীপাড়া গ্রামের গৃহিনী নাজমা বেগম (৩৮) বলেন, “বন্যায় ঘরে পানি উঠে নাই। কিন্তু সব সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এখন রান্নার সবজি কেনা লাগবে। আমরা গরীব মানুষ। খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার স্বামী কাজেও যেতে পারছে না।”
খেয়ারচর রাবার ড্যাম এলাকার কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, “জমিতে খড় পড়ে আছে। ঘাসও পানির তলে। আমরা গরু-ছাগল-ভেড়া নিয়া বিপদে আছি।”
খেয়ারচর ইউপির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, তার ওয়ার্ডের ছয় শতাধিক বাড়িতে পানি উঠেছে। লোকজন বের হতে পারছে না।
পানিবন্দি কেউ কোনো সরকারি সহযোগিতা পায়নি বলে এ সদস্যের ভাষ্য।
রৌমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, জনপ্রতিনিধিদের বন্যা কবলিত এলাকায় খোঁজ নিয়ে দুর্গতদের তালিকা করতে বলা হয়েছে।
রৌমারী স্থলবন্দরে পানি উঠেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর সঙ্গে জড়িত পাঁচ থেকে ছয় হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছে। তাদের বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ তিন লাখ টাকার শুকনো খাবার ও মোমবাতি কেনা হচ্ছে বলে ইউএনও আশরাফুল জানান।