ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বজ্রপাতে ৬ জেলায় ১৪ মৃত্যু
Published : Saturday, 18 June, 2022 at 12:00 AM, Update: 18.06.2022 1:10:17 AM
বজ্রপাতে ৬ জেলায় ১৪ মৃত্যুবজ্রপাতে একদিনেই দেশের ৬ জেলায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনাগুলো ঘটেছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহেই প্রাণ হারিয়েছে শিশুসহ ৬ জন। সকালে ধোবাউড়া উপজেলায় বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান কৃষক আবু সাঈদ। ৩০ বছর বয়সী আবু সাঈদের বাড়ি গোয়াতলা ইউনিয়নের চরমোহিনী এলাকায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধোবাউড়া থানার ওসি টিপু সুলতান। তিনি মৃতের স্বজনদের বরাতে জানান, স্থানীয় গুগড়া বিলে মাছ ধরতে যান সাঈদ। তখন বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এরপর দুপুরে জেলা সদর ও নান্দাইলে বজ্রপাতে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যুর খবর আসে। সদরের দড়ি কুষ্টিয়া ও নান্দাইল উপজেলার গাঙ্গগাইল ইউনিয়নের গাঙ্গগাইল বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন ও নান্দাইল মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওবায়দুর রহমান। সদরে যারা মারা গেছেন তারা হলেন ৪০ বছরের আবু বক্কর ও ৩০ বছরের জাহাঙ্গীর আলম। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার দড়ি কুষ্টিয়া ইউনিয়নে। তারা কৃষক ছিলেন। কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন  বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের কিনারায় মাছ ধরতে গিয়েছিল কৃষক আবু বক্কর ও জাহাঙ্গীর আলম। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়।’ নান্দাইলে বজ্রপাতে মারা গেছে একই পরিবারের তিন শিশু। তারা হলো, ১২ বছরের সাঈদ মিয়া, ১১ বছরের স্বাধীন মিয়া এবং ৮ বছরের শাওন। তাদের সবার বাড়ি উপজেলার গাঙ্গাইল ইউনিয়নের কংকরহাটি গ্রামে। সম্পর্কে তারা চাচাতো ভাই। নান্দাইল মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টির সময় ওই তিন শিশু একসঙ্গে মাছ ধরতে যায়। দুপুরে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে।’ গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শুক্রবার দুপুরে মাছ ধরতে গিয়ে এক কৃষক এবং বিকেলে কালিয়াকৈরের ফুলবাড়িয়ায় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে আরেক কৃষকের মৃত্যু হয় বজ্রপাতে।
মৃতরা হলেন, কাপাসিয়ার বারিষাব ইউনিয়নের ৫০ বছর বয়সী কিরণ মিয়া ও কালিয়াকৈরের ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের মজিদচালা এলাকার ৫৫ বছর বয়সী আব্দুস সোবাহান। কাপাসিয়া থানার ওসি এ এফ এম নাসিম বলেন, ‘দুপুর ৩টার দিকে কাইজলি বিলে মাছ ধরতে যায় কৃষক কিরণ মিয়া। এ সময় বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। এলাকাবাসী তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কালিয়াকৈর থানার ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মোল্লা জানান, সেখানকার মজিদচালা গ্রামের কৃষক আব্দুস সোবহান শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশের মাঠ থেকে গরু আনতে যায়। এ সময় বজ্রপাতে মাঠেই তিনি মারা যান। আশপাশের লোকজন তাকে নিথর পড়ে থাকতে দেখে পরিবারকে জানায়। স্বজনা গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। বগুড়ার আদমদীঘি ও ধুনটে বজ্রপাতে ২ প্রাণহানি হয়েছে। আদমদীঘির ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কোমারভোগ গ্রামে দুপুর ১২টার দিকে বজ্রপাতে প্রাণ গেছে কৃষক জহুরুল ইসলামের। আদমদীঘি থানার এসআই প্রদীপ কুমার বর্মন স্থানীয়দের বরাতে জানান, বাড়ির পাশে মরিচ ও অন্যান্য সবজির জমি আছে জহুরুলের। বেলা ১২টার দিকে ওই জমির পরিচর্যার কাজ করছিলেন তিনি। সে সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।এর আগে ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে মারা গেছেন আরেক কৃষক। ইউপি চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, মৃতের নাম তবজেল হোসেন। শুক্রবার সকালে বৃষ্টির মধ্যে তিনি বাড়ির পাশে রোপা-আমনের ক্ষেতে পানি নিষ্কাশনের কাজ করছিলেন। সে সময় বজ্রপাতে তার শরীরে কিছু অংশ পুড়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। দুপুরে বজ্রপাতে সিরাজগঞ্জ শহরে দুই জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ৪ জন।সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সদর থানার দুই স্থানে দুইজন বজ্রপাতে মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চার জন। আহতদের সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তাদের চিকিৎসা চলছে।’ নওগাঁর মান্দায় বজ্রপাতে নাঈম হোসেন নামে ১৪ বছরের কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মান্দা থানার ওসি শাহিনুর রহমান জানান, বিকেলে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির পাশের মাঠে গরু চরাতে যায় নাঈম। সে সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বিকেলে বজ্রপাতে প্রাণ গেছে কৃষকের। উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের বাগান দোপের মাঠে নিজ জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মারা যান ৫৫ বছর বয়সী রহিম উদ্দিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম।