জহির
শান্ত:
বিশিষ্ট কবি, নজরুল গবেষক ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারুল হকের
গবেষণা গ্রন্থ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী রচনায় নতুন আলো ফেলেছেন
বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লার প্রাক্তন জেলা প্রশাসক কবি ও প্রাবন্ধিক
মনজুরুর রহমান। তিনি বলেন, আনোয়ারুল হক তার গ্রন্থে চমৎকার কিছু তথ্য তুলে
এনেছেন। আমি বিশ্বাস করি এখানে যারা আছেন, তারা গ্রন্থটি পাঠ করবেন। আমি
নিজে দু’বার গ্রন্থটি পাঠ করেছি। প্রতি পৃষ্ঠায় আমি কিছু কিছু নোট করেছি।
নজরুলের জীবনী রচনার ক্ষেত্রে তার বইটি একটি নতুন আলো ফেলেছে। এই কাজটি যে
কুমিল্লা থেকে হলো, সে জন্য কুমিল্লাবাসী আবার নতুন করে গর্ব করতে পারেন।
আনোয়ারুল হক তার গবেষণাগ্রন্থে কিছু প্রশ্ন তুলে এনেছেন, সেগুলো ভাববার সময়
এসেছে।
গতকাল সন্ধ্যায় কুমিল্লা নজরুল ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে আনোয়ারুল
হক’র গবেষণাগ্রন্থ ‘নজরুল নার্গিস প্রমীলা নবমূল্যায়ন’ এর পাঠ-প্রতিক্রিয়া
অনুষ্ঠানে নির্ধারিত আলোচকের বক্তব্য রাখতে গিয়ে মনজুরুর রহমান এসব কথা
বলেন।
কুমিল্লায় নজরুল ইনন্সটিটিউটর প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
বিশষ্ট নজরুল ও রবিন্দ্র গবেষক ড. রফিকুল ইসলামের প্রচেষ্টাতেই কুমিল্লায়
গড়ে তোলা হয়েছে নজরুল ইন্সটিটিউট কেন্দ্র। এই ইন্সটিটিউটের মাধ্যমে আগমীর
প্রজন্মের মধ্যে যে নজরুলের চেতনাটা সঞ্চারিত হচ্ছে এটি একটি বড় কাজ হয়েছে।
বাংলাদেশের আর কোথাও কিন্তু হয়নি।
তিনি বলেন, আমি যখন এখানে (কুমিল্লা)
জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলাম, তখন কোনো এক অনুষ্ঠানে ড. রফিকুল ইসলাম
স্যারকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনা হয়েছিল। শিল্পকলা একাডেমীতে
অনুষ্ঠান হয়েছিল। সার্কিট হাউসে তিনি কুমিল্লার সুধীজনদের সাথে কথা বলেছেন।
তিনি বৃহত্তর কুমিল্লার সন্তান, চাঁদপুরে তাঁর বাড়ি। পরে তিনি আমাকে
বলেছেন, কি করতে পারি। তখন আমি স্যারকে বলেছিলাম, এখানকার মানুষের যে
দাবি... নজরুলের জন্য এখানে কিছু হয় নাই। এখানে কান্দিরপাড় ও আশপাশে কিছু
সাইনবোর্ড ছাড়া দৃশ্যমান কিছু নেই। আমি তাঁকে বললাম, আমি জানি মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী আপনার ডিরেক্ট ছাত্রী, আপনি চাইলে এটি সম্ভব। সেটি হচ্ছে
এখানে (কুমিল্লায়) নজরুল ইন্সটিটিউট কেন্দ্রের একটি শাখা করা যায় কি-না?
এখানে কিছু গবেষক আছেন, একানে বিশ্ববিদ্যালয় আছে, অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষ
আছেন। এখানে নজরুলের চর্চাটা ভিন্নভাবে হতে পারে। তখন তিনি সরকারের সঙ্গে
বিষয়টা ফয়সালা করলেন। স্থির হলো জায়গা আমরা দেবো। এটা নজরুল পরিষদের জায়গা।
পরিষদের কর্তাব্যক্তিরাও আমার সাথে সম্মত হয়েছেন। এরপরে অনেক বাঁধা
বিপত্তির পরেও এটা হয়েছে। বর্তমান যিনি সংসদ সদস্য আছেন, তারও অবদান আছে।
আমি আজকে সকালে এসে দেখলাম বাচ্চারা ক্লাস করছে। আগমীর প্রজন্মের মধ্যে যে
নজরুলের চেতনাটা সঞ্চারিত হচ্ছে এটি একটি বড় কাজ হয়েছে। বাংলাদেশের আর
কোথাও কিন্তু হয়নি।
অনুষ্ঠানে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন
কবি ও কথা সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, প্রাবন্ধিক ও অধ্যাপক ড. মোঃ মেহেদী
হাসান। বক্তব্য রাখেন গ্রন্থের লেখক আনোয়ারুল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন
কবি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জহিরুল হক দুলাল, অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালক
(যুগ্ম সচিব) মাসুদ রানা চৌধুরী, দৈনিক কুমিল্লার কাগজ সম্পাদক আবুল কাশেম
হৃদয়, নাট্য ব্যক্তিত্ব শাহজাহান চৌধুরী, কবি রতন ভৌমিক প্রণয়, সরকারি
মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ফারুক আহমেদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সহকারী
অধ্যাপক রাহুল তারণ পিন্টু, অধ্যাপক রীতা সরকার, হানিফ সরকার,কবি খলিলুর
রহমান শুভ্র প্রমুখ।