নিজস্ব
প্রতিবেদক : দেশের বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ডায়রিয়া, সাপের কামড়, পানিতে
ডুবে, ভূমিধসে এবং নানা আঘাতজনিত কারণে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৬ জনের মৃত্যু
হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগে ১৮ ও ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন ১৫ জন।
মঙ্গলবার
(২১ জুন ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও
কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে এ
তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের চার বিভাগে বন্যাকবলিত
হয়ে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৩৪ জন। এর মধ্যে ১৭
জুন থেকে ২০ জুনের মধ্যে ডায়রিয়ায় ২ হাজার ১৭৯ জন, আরটিআইতে ৮৭ জন,
বজ্রপাতে ১৩ জন, সাপের কামড়ে ৪ জন, পানিতে ডোবায় ১৯ জন, চর্মরোগে ১৪০ জন,
চোখের প্রদাহে ৪৬ জন, নানা আঘাতে ২৫ ও অন্যান্য সমস্যায় পড়েছেন ৪৪২ জন।
সৃষ্ট
বন্যা পরিস্থিতিতে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত
হয়েছেন ৩১৫ জন, আরটিআইতে ১১, সাপের কামড়ে ৩ জন, পানিতে ডুবে ৩ জন, চর্মরোগে
২২ জন, চোখের প্রদাহে ১৮ ও অন্যান্যভাবে আঘাত পেয়েছেন ১০ জন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বন্যা কবলিত চার বিভাগের ১৮৫টি উপজেলার মধ্যে ৬১টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে।
উজান
থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা
দেখা দিয়েছে। এরই প্রভাবে সিলেট সদরসহ সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার
জেলা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি এবার আঁছড়ে পড়ছে দেশের মধ্যাঞ্চলীয়
জেলাগুলোতেও। ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা ছাড়াও টাঙ্গাইল ও এর
আশপাশের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর
প্রভাবে গত সপ্তাহে প্রতিবেশী দেশ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পূর্ব খাসি
পাহাড়ের চেরাপুঞ্জিতে ১২২ বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়।
গত ১৫ থেকে ১৭ জুন বাংলাদেশের উজানে আসাম ও মেঘালয়ে তিনদিনের টানা বৃষ্টির
পানি পাহাড় গড়িয়ে ঢল হয়ে নামে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। এতে সিলেট
জেলাসহ বিভাগের প্রায় সব জেলা প্লাবিত হয়। তলিয়ে যায় সিলেটের প্রায় ৮০
শতাংশ ও সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশের বেশি এলাকা।
বন্যাকবলিত প্রায় সব এলাকায়
সুপেয় পানিসহ অন্যান্য খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দেয়। এরইমধ্যে মঙ্গলবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং গত রোববার সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম
শফিউদ্দিন আহমেদ বন্যাকবলিত সিলেট এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগ
ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সংস্থা
বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।