ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
হাটের বিক্রেতারা হতাশ
বেচা-কেনা বেশি হচ্ছে খামারে
Published : Tuesday, 5 July, 2022 at 12:00 AM, Update: 05.07.2022 1:43:20 AM
হাটের বিক্রেতারা হতাশ জহির শান্ত   ||
ঈদের আর মাত্র ৪ দিন বাকী থাকলেও কোরবানির পশুর হাটে বেঁচাকেনা এখনো জমে উঠেনি। ঝক্কিঝামেলা এড়াতে এবার খামারে গিয়ে গরু পছন্দ করে কেনাকাটায় ঝুঁকছেন ক্রেতারা। যে কারণে এখন কিছুটা হতাশ হাটের গরু বিক্রেতারা। যার প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে কুমিল্লার বিভিন্ন বাজারে। গতকাল সোমবার ও তার আগের দিন রবিবার কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে গরু বিক্রির মন্দা ভাব। বাজারগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী মোটামুটি গরু থাকলেও বিক্রি অনেকটাই কম। বিক্রেতারা বলছেন, ধারণার অর্ধেক দামেও গরু বিক্রি করতে পারছেন না তারা। যদিও ক্রেতা এবং ইজারাদাররা বলছেন, কোবানির পশুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে। আর দুয়েকদিনের মধ্যেই জমে উঠবে বেচা-কেনা।
এদিকে খামারের পাশাপাশি অনলাইনে ফেসবুকে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে গরু-ছাগল বেঁচাকেনা করছেন অনেকেই। খামার ও ব্যক্তিগত পশুপালনকারীরা বিজ্ঞাপনে লাইভ ওয়েট দিয়ে গরু বা ছাগলের সম্ভাব্য দাম বেঁধে দিয়ে আকর্ষণ করছেন ক্রেতাদের, কেউ কেউ নির্ধারিত দামে গরু কিনলে পরিবহন ভাড়া ফ্রিসহ নানান উপহারের ঘোষনাও দিচ্ছেন। যে কারনে হাটে গিয়ে ভিড়ের ঝক্কি ঝামেলা পোহানোর চেয়ে খামারে গিয়ে গরু কেনার প্রতি ঝুঁকছেন ক্রেতারা।   
সোমবার কুমিল্লায় কয়েকটি কোরবানির পশুর হাঁটে সরেজমিনে গিয়ে এবং খবর নিয়ে জানা গেছে, বাজারগুলোতে একদিকে যেমন গরুর সংখ্যা যেমন কম; তেমনি নেই ক্রেতাদের আনা-গোনাও। যারাই বাজারে আসছে দাম দর করে চলে যাচ্ছেন। যদিও ক্রেতাদের অভিযোগ বিক্রেতারা গরুর দাম হাঁকছেন অনেক বেশি।
সাহেবাবাদ বাজারের ইজারাদার দুলাল হোসেন সরকার বলেন, বাজার এখনো জমে উঠেনি। দুয়েকদিন পর থেকে কেনাকাটা বাড়বে। মানুষজন যারাই আসছে, তারা মূলত দামজানতে চাইছে। আরো কয়েকদিন পর হয়তো কিনবে। শুনেছি যারাই কিনছেন খামার থেকে কিনছেন। এবার বাজার বেশ চড়াই মনে হচ্ছে। দেখা যাক সামনে দিনগুলোতে কি হয়।
বুড়িচং উপজেলার লাটিয়ার বাজারে গিয়ে অবশ্য কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে পর্যাপ্ত গরু থাকলেও দাম নিয়ে হতাশ বিক্রেতারা। তারা বলছেন, অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে গরু। কারণ হাতে আরো কিছুদিন সময় থাকায় ক্রেতারা এখনো বাজারমুখি হচ্ছেন না। আর যারাই আসছেন তারা দাম পরখ করে চলে যাচ্ছেন।
সরকারিভাবে শুমারীতে দেখা গেছে, কোরবানির চাহিদা মেটাতে দেশীয় পশুর সংখ্যা পর্যাপ্ত রয়েছে। তারপরও প্রতিবছর ভারত থেকে অবৈধ পথে গরুর কারণে চাহিদা কমে যায় স্থানীয় খামারে লালন-পালন করা গরু-ছাগলের। যে কারণে অনেক খামারীকেই হাটে গরু বিক্রি না করে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়।
ভারত থেকে আসা গরুর কারণে দেশীয় খামারীরা লোকসানের মুখে পড়তে পারে- এমন আশঙ্কা জানিয়ে সেইফ ক্যাটল ফার্মের সত্ত্বাধিকারী নাহিদ হোসেন জানান, এখনো পর্যন্ত বাজারে গরুর দাম খামারীদের অনুকূলে আছে। তবে যদি জেলার প্রধান প্রধান বাজারগুলোতে ভারতীয় গরুর সংখ্যা বেড়ে যায়Ñ তাহলেই খামারীদের জন্য বিপদ। আমরা আশা করছি ভারত থেকে গরু আসা ঠেকাতে প্রশাসন সচেষ্ট থাকবে।
আগামী ১০ জুলাই পবিত্র ঈদ উল আযহা অনুষ্ঠিত হবে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবার ঈদে কুমিল্লায় কোরবানীর পশুর চাহিদা ২ লাখ ৪৮ হাজার। এর বিপরীতে জেলায় মজুদ আছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৩২টি। এবারের ঈদের জন্য জেলাজুড়ে স্থায়ী পশুর হাট আছে ৭৫টি এবং অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩৭৯টি। তবে জেলা প্রশাসন থেকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে এবং মহাসড়কের পাশে কোরবানির পশুর হাট বসতে দেওয়া হবে না।