Published : Wednesday, 6 July, 2022 at 12:00 AM, Update: 06.07.2022 1:07:10 AM
মজিবুর রহমান বাবলু, চৌদ্দগ্রাম ||
কুমিল্লার
চৌদ্দগ্রামে শালিশী সভায় হামলার ঘটনায় আহত ওয়াসিম(২৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায়
মারা গেছেন। তিনি উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের খিরণশাল গ্রামের ফরিদ মিয়ার
ছেলে। মঙ্গলবার বিকেলে তথ্যটি নিশ্চিত করেন নিহত ওয়াসিমের বড় বোন রিনা
আক্তার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লনিশ^র গ্রামের এছাক মিয়ার ছেলে
সাদ্দাম হোসেন ঘরের মেঝে পাকা করতে স্থানীয় কালাম মজুমদার মার্কেটে অবস্থিত
ওয়াসিমের বড় ভাই শহীদের রড সিমেন্ট দোকান থেকে ১০ বস্তা সিমেন্ট, এক গাড়ি
বালু ও ৫০০ ইট ক্রয় করে। সাদ্দাম হোসেন গত ৩০ এপ্রিল সিমেন্ট, বালু ও ইট
বাবদ ১৭ হাজার টাকা শহীদকে দেওয়ার জন্য রিপন নামে এক যুবকের টাকা দেন।
কিন্তু রিপন টাকাগুলো শহীদকে না দিয়ে আত্মসাত করায় উভয় পক্ষের মধ্যে ঝগড়ার
সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ২৮ জুন মঙ্গলবার রাতে লনিশ^র গ্রামে একটি সালিশি সভা
হয়। সভায় টাকা দেওয়া-নেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির
এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ঘর বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে ওয়াসিমসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। স্থানীয়রা আহত ওয়াসিমকে প্রথমে
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে উন্নত
চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে
তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিলে পরিবারের সদস্যরা
ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়
সোমবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। ওয়াসিমের পাঁচ বছর ও আড়াই বছর বয়সি দুইটি
কণ্যা সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাব উদ্দিন
মজুমদার বলেন, লনিশ^র গ্রামের সাদ্দাম গংরা পূর্ব পরিকল্পনা করে সালিশি
সভার আয়োজন করে। এর আগে তারা পাশর্^বর্তী শুভপুরের পাশাকোট গ্রাম থেকে বেশ
কিছু ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে জড়ো করে রাখে। বিষয়টি ওয়াসিমরা জানতো না।
সভাটি একটি নাটক মাত্র। এখানে গ্রাম্য কোন সমাজপতি ছিল না। সভা শুরু হওয়ার
সাথে সাথে কথা কাটাকাটির জের ধরে ওয়াসিমকে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে
মুমুর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার শেষে
হাসপাতালে ভর্তি করে। দীর্ঘ ৬ দিন চিকিৎসা শেষে সোমবার রাতে সে মারা যায়।
ওয়াসিমের
বড় বোন রিনা আক্তার বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার ভাইকে লনিশ^র
গ্রামের সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে এবং রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় সোমবার গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়।
চৌদ্দগ্রাম
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, লনিশ^র
গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত যুবক ওয়াসিমের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। এখনও এ
ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে। ওয়াসিমের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর সাদ্দাম ও তার পক্ষের
লোকজন গা ঢাকা দেয়ায় তাদের কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।