ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
দেবিদ্বারে মরহুম মো. আবদুল বারী স্যারের স্মরণে দোয়া ও স্মরণ
শাহীন আলম,
Published : Tuesday, 12 July, 2022 at 2:05 PM
দেবিদ্বারে মরহুম মো. আবদুল বারী স্যারের স্মরণে দোয়া ও স্মরণপ্রিয় শিক্ষকের স্মৃতিচারণ নিয়ে সাদা-কালো রঙের মঞ্চে দাঁড়িয়ে একে একে স্মৃতিচারণ করছিলেন স্কুলজীবনের। পিনপতন নীরবতা। আবেগে চোখ ভিজে যাচ্ছিল অনেকেরই। বক্তব্যে কেউ কেউ বলছিলেন,‘আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত সবটুকুই বারী স্যারের অবদান’। মা-বাবা আমাকে শুধু জন্মই দিয়েছেন। আর বাকিটুকু গড়েছেন বারী স্যার। এখন আমরা কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার কেউ আবার সরকারের উচ্চ পদে কর্মরত আছি। আজও আমরা প্রিয় শিক্ষক বারী স্যারকে ভুলিনি। 

সোমবার সকালে প্রাক্তন প্রধান মরহুম আবদুল বারী স্যারের দোয়া ও স্মরণ সভায় স্মৃতিচারণ করেন মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। স্মৃতিবিজড়িত মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দোয়া ও স্মরণ সভাটির আয়োজন করেন প্রাক্তন ছাত্র/ছাত্রীবৃন্দ। সভায় প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছাড়াও বারী স্যারের পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন।   

প্রাক্তন শিক্ষার্থী অবসর প্রাপ্ত যুগ্ম সচিব আবদুল মজিদের সভাপতিত্বে সহযোগী অধ্যাপক মেডিসিন) ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকার, বুয়েটের সহযোগী অধ্যাপক ড.খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত সচিব আবু দাউদ গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সচিব মো. মনিরুল ইসলাম, ডা. মাখন লাল পাল, ডা. আহমেদ কাদের জামান, প্রাক্তন শিক্ষক সহিদুল ইসলাম, হরে কৃষ্ণ দেবনাথ, মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, বারী স্যারের সহধর্মীনি অবসর প্রাপ্ত শিক্ষিকা ছালেহা বেগম, সন্তান শাহাদাৎ হোসেন মিঠুসহ ১৯৭০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রতিটি ব্যাচের একজন করে প্রাক্তন শিক্ষার্থী স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন। 

পরম শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত গলায় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেন, যেদিন মাধ্যমিকের গÐি পেরিয়ে চলে আসলাম সেদিন হু হু করে মন কেঁদে উঠেছিলো। বার বার মনে হচ্ছিলো প্রিয় বারী স্যারকে রেখে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। বাস্তবে দূরে থাকলেও প্রিয় এ মানুষটির কথা সবসময় মনে রেখেছি। চলার পথের পাথেয় হয়ে থাকবে আমাদের বারী স্যার। আজ স্যার আমাদের মাঝে বেঁচে নেই। মহান আল্লাহ স্যারকে জান্নাত দান করুন। এসময় বক্তারা বারী স্যারের নামে একটি ফাউন্ডেশন করারও প্রস্তাব দেন শিক্ষার্থীরা। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক তারিখ মাহমুদ ও ১৯৯০ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মিজানুর রহমানের পরিচালনায়  স্মৃতিচারণে বক্তারা আরও বলেন, আবদুল বারী স্যার শুধু শিক্ষকই নয় তিনি একজন ভালো বন্ধুও। সাহসী, ত্যাগী, মেধাবী, কৌশলী, ভদ্র। ছাত্র হিসেবে ওনার সঙ্গে যত স্মৃতি আছে কোন কিছুই ভোলার মতো নয়। তিনি আমাদের সঠিক মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি শিখিয়েছেন কীভাবে একজন আদর্শ মানুষ হওয়া যায়। সমাজ, দেশের কীভাবে উন্নতি করা যায় সে শিক্ষাও আমরা বারী স্যারের কাছে পেয়েছি। স্যারের মুখের নীতি কথা গুলো ভোলা অসম্ভব। তাঁর শাসন, আদেশ, নিষেধ, উপদেশ সব আজ মনে পড়ছে। ইচ্ছে করছে  কিশোর বেলায় আবার স্যারের ফিরে যাই।


প্রসঙ্গত, মরহুম আবদুল বারী ১৯৬৩ সালে মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন পরে ২০০৪ সালে তিনি ওই স্কুল থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অবসর নেন। ২০২২ সালের ১০ মার্চ তিনি ইন্তেকাল করেন। এর আগে তিনি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হন।