ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
একই ঘটনায় ২ তদন্ত কমিটি
দুই ব্যক্তি উভয় কমিটিতে
Published : Wednesday, 7 September, 2022 at 12:00 AM, Update: 07.09.2022 12:54:22 AM
একই ঘটনায় ২ তদন্ত কমিটি সাঈদ হাসান, কুবি ||
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘মিথ্যা ও মানহানিমূলক’ বক্তব্যের বিচার চেয়ে শিক্ষক সমিতির আবেদন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানবন্ধনের ব্যানারে লেখা ও বক্তব্যে আনিত অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক তাহের ও শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আবার উভয় কমিটিতে রাখা হয়েছে প্রক্টর ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনকে।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত পৃথক দু’টি অফিস আদেশ থেকে বিষয়টি জানা যায়। এদিকে ২৩ আগস্টের ঘটনার প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠনের একটি অফিস আদেশের তারিখ উল্লেখ রয়েছে ৬ আগস্ট, ২০২২। ওই অফিস আদেশের ডানপাশে ও নিচে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরেও উল্লেখ করা হয়েছে একই তারিখ।
একটি অফিস আদেশে বলা হয়, অধ্যাপক তাহেরের বিরুদ্ধে গত ২৩ আগস্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ কর্তৃক মিথ্যাচার ও মানহানিমূলক বক্তব্যের বিচার চেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরকে আহবায়ক, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহ. আমিনুল ইসলাম আকন্দকে সদস্য এবং প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
পৃথক আরেকটি অফিস আদেশে বলা হয়, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশের মানববন্ধনে আনীত বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানকে আহ্বায়ক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান এবং ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রশিদুল ইসলাম শেখকে সদস্য ও প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীকে সদস্য সচিব করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়।
উভয় কমিটিকেই আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে একই বিষয়ে পৃথক কমিটি ও উভয় কমিটিতে একই ব্যক্তিকে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক সমিতি।সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী বলেন, একই বিষয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। একাধিক কমিটি করার পিছনে প্রশাসনের হীন উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, একই ঘটনায় দু’পক্ষ থেকে অভিযোগ আসায় দু’টি কমটি গঠন করা হয়েছে। আর একই ব্যক্তি উভয় কমিটিতে থাকার বিষয়ে ‘এটি কর্তৃপক্ষের বিষয়। কর্তৃপক্ষ যাকে ইচ্ছে তাঁকে রাখতে পারে’ বলে দাবি করেন আমিরুল হক।
তবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁকে পাওয়া না যাওয়ায় তাঁর মোবাইলে কল দিয়ে বরাবরের মতো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে যিনি কমিটি করেছেন, তাঁর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
এর আগে গত মাসের ২৩ তারিখ কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: জসিম উদ্দিনকে মুঠোফোনে চাকুরিচ্যুত করার হুমকিসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে আন্দোলন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ঘটনায় অধ্যাপক তাহেরের মানহানি করা হয়েছে দাবি করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধনের পরদিনই মানহানির প্রতিবাদ জানিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উল্টো মানববন্ধন করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সেসময় মানববন্ধনে পরবর্তী তিন কর্মদিবসের মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হয়। একই সময়ে অভিন্ন দাবিতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশ (সাইদুল-খলিলুর সমর্থিত) ও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। মানহানির ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছিল শাখা ছাত্রলীগও। তবে দাবি না মানায় ২৯ আগস্ট ও ৬ সেপ্টেম্বর ফের আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। সবশেষ মঙ্গলবার প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে ছাত্র-ছাত্রীরা।