Published : Wednesday, 7 September, 2022 at 12:00 AM, Update: 07.09.2022 12:54:35 AM

মো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ||
কুমিল্লার
মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন দিঘীরপাড় গ্রামের কবরস্থান থেকে
দাফনের দুই মাস পর বাবুল মিয়া (৩১) নামে এক যুবকের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
সে ওই গ্রামের হুমায়ুন মিয়ার ছেলে। গত ২ জুলাই প্রভাবশালীদের সহযোগিতায়
তাকে ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪
জুন ভোররাতে বাবুল মিয়া ও তার চাচাতো ভাই জাফর আহমেদ ফজর নামাজ পড়তে মসজিদে
রওয়ানা দেয়। পথিমধ্যে উৎপেতে থাকা ৮/১০ জন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে
তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। তখন তাদের শোর-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে
এসে রক্তাক্ত বাবুল মিয়া ও জাফর আহমেদকে উদ্ধার করে। পরে আহত বাবুল মিয়াকে
নবীনগর এলাকার বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। অপর আহত জাফর আহমেদ
ঢাকার একটি হসপিটালে চিকিৎসা নেয়। কিছুটা সুস্থ্য হয়ে ৭ দিন পর গত ১ জুলাই
বাড়ী আসলে ঐদিন রাত ৯টায় বাবুল মিয়া মারা যায়। পরে হত্যাকারীরা প্রভাব
খাটিয়ে বাবুল মিয়াকে জ¦ীনে মেরে ফেলেছে এমন অপ:প্রচার চালিয়ে ময়না তদন্ত
ছাড়াই লাশ দাফন করে ফেলে।
এ বিষয়ে গত ৫ জুলাই নিহতের চাচাতো ভাই ও ওই
ঘটনায় আহত জাফর আহমেদ বাদী হয়ে একই গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে ছন্দু
মিয়াসহ ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে কুমিল্লার ৮নং আমলী আদালতে একটি পিটিশন মামলা
দায়ের করেন। আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ওমর ফারুক
বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পিবিআই কুমিল্লাকে নির্দেশ দেন।
অপর
দিকে বাবুল মিয়ার মৃত্যুর রহস্য নিশ্চিত করতে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্ত
করার জন্য আদালতের অনুমতি চায় পিবিআই। আদালতের নির্দেশ মতে মঙ্গলবার দুপুরে
উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ নাজমুল হুদার
উপস্থিতিতে বাবুল মিয়ার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। পরে সূরতহালপূর্বক
ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পিবিআই।
এ
বিষয়ে মামলার বাদী মোহাম্মদ জাফর আহমেদ অভিযোগ করে দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে
বলেন, আমাদের উপর হামলা করে রক্তাক্ত করার পরও আসামীরা চিকিৎসা পর্যন্ত
করতে দেয়নি। সময় মতো চিকিৎসা দিতে পারলে বাবুল মিয়াকে বাঁচানো যেতো। শুধু
তাই নয়, মারা যাওয়ার পর জ¦ীনে মেরেছে বলে অপ: প্রচার চালিয়ে আমাদের ছাড়াই
প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় লাশ দাফন করে ফেলে। পুলিশকে জানানো দূরের কথা কেউ
প্রতিবাদ করারও সাহস পায়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই’র এস
আই মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, বাবুল মিয়ার
মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করার জন্য আদালতের নির্দেশে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা
হয়। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার
সন্ধ্যায় লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।