Published : Thursday, 8 September, 2022 at 12:00 AM, Update: 08.09.2022 12:57:48 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর:
কুমিল্লায়
অগ্নিদগ্ধে নিহত কলেজ শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার মুনার মৃত্যুর নিয়ে
ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। কলেজ শিক্ষিকা মুনার গায়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা কোন
দুর্ঘটনা নয় হত্যার উদ্দেশ্যেই অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে এমনটাই দাবী করে
স্বামী সুমন সালাউদ্দিন এর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের
ভগ্নিপতি তরিকুল ইসলাম।
গত ৩০ আগস্ট রাতে কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স
এলাকার ভাড়া বাসায় অগ্নিদগ্ধের পর ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মৃত্যুর কাছে হার
মেনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কুমিল্লা মডেল কলেজ এর বাংলা বিভাগের
শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার মুনা। মৃত্যুর দুইদিন পর মঙ্গলবার দিনগত রাত ১টায়
(৭ সেপ্টেম্বর বুধবার) স্বামী সুমন সালাউদ্দিনকে একমাত্র আসামী করে
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ভগ্নিপতি মো.
তরিকুল ইসলাম। ওই মামলায় স্বামী সুমন সালাউদ্দিনকেই একমাত্র আসামী করা
হয়েছে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশ
পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হানিফ সরকার।
বাদীর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা
হয়েছে, ২০১৭ সালে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয় তাহমিনা আক্তার মুনা ও সুমন
সালাউদ্দিন এর। সুমন সালাউদ্দিন এর কোন নির্ধারিত পেশা ছিল না। বেকার জীবন
যাপন করে। প্রায়ই যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী মুনাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে
নির্যাতন করতো। ৩০ আগস্ট রাত ১টায় মুনার শরীরের কেরোসিন ঢেলে অগ্নিসংযোগ
করে পাষন্ড স্বামী সুমন সালাউদ্দিন।
এদিকে, দিন যতই যাচ্ছে কলেজ
শিক্ষিকা মুনার মৃত্যুর বিষয়টি হত্যায় রূপনিয়ে সন্দেহের তীর স্বামী সুমন
সালাউদ্দিন এর দিকেই এগুচ্ছে। স্বামী সুমন সালাউদ্দিন এর পরকিয়া প্রেমের
বলি হতে হয়েছে এক সন্তানের জননী মুনাকে।
একই ভবনের বাসিন্দা ও নিহতের
নিকটাত্মীয়রা জানান, সুমন সালাউদ্দিন বিভিন্ন নারীর সাথে সম্পর্ক থাকায় এসব
নিয়েও পরিবারে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। যে রাতে মুনা অগ্নিদগ্ধ হয় সেই রাতে
তাদের ফ্লাটে পানি সরবরাহও বন্ধ ছিল। তাদের প্রশ্নে, রান্না ঘরের
কেরোসিনের বোতল যদি উপর থেকে পরে আগুনের সূত্রপাত ঘটতো, তাহলে মুনার দেহের
উপরের অংশই আগে অগ্নিদগ্ধ হতো। বুক থেকে নিচের অংশে কেন? সব কিছু বিবেনায়
সুমন সালাউদ্দিনকেই সন্দেহ করছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে, সুমন
সালাউদ্দিন এর যোগাযোগ করতে চাইলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর সুমন সালাউদ্দিন আত্মগোপনে চলে যান।
এ
ব্যাপারে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. সহিদুর
রহমান জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা অত্যন্ত
গুরুত্বের সাথে দেখছি। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।