আধিপত্য
দেখিয়ে প্রথমার্ধে ২ গোল করে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বিরতির পর এক গোল শোধ
দিয়ে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় নেপাল। কিন্তু ফর্মের তুঙ্গে থাকা বাংলাদেশ
দল হাল ছাড়েনি। কৃষ্ণা রানী সরকারের লক্ষভেদে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়। শেষ
পর্যন্ত এই ফরোয়ার্ডের জোড়া লক্ষ্যভেদে কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে নতুন
ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে
৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ট্রফি জয়ের উল্লাসে মাতোয়ারা সাবিনা
খাতুনরা।
বৃষ্টিসিক্ত মাঠে নিজেদের দর্শকের সামনে নেপাল সেভাবে জ্বলে
উঠতে পারেনি। বিপরীতে চাপমুক্ত হয়ে খেলার চেষ্টা করে বাংলাদেশ প্রথমার্ধে
লিড নেয় ২-০ গোলে। এরপর একবার গোল হজম করলেও মনোবল হারায়নি তারা। দুর্দান্ত
ফুটবলে সাফে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে নতুন ইতিহাস লিখেছে বাংলাদেশের
মেয়েরা।
গতকাল সোমবার কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকে
বাংলাদেশ আক্রমণে। ম্যাচঘড়ির প্রথম মিনিটে মারিয়া মান্দার দূরপাল্লার শট
গোলকিপার শুয়ে পড়ে তালুবন্দি করেন। ১০ মিনিটে চোট পেয়ে সিরাত জাহান স্বপ্না
উঠে যান। তার জায়গায় মাঠে নামেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। চার মিনিট পর তার
গোলেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ডান প্রান্তে মনিকা চাকমার ক্রসে শামসুন্নার
জুনিয়রের দারুণ প্লেসিং জড়িয়ে যায় জালে। এতে গ্যালারিতে থাকা নেপালি
দর্শকরা স্তব্ধ হয়ে যান।
৩৬ মিনিটে নেপাল সমতায় ফেরার সুযোগ নষ্ট করে।
ইন্দিরা রাজের ফ্রি-কিক গোলকিপার রুপনা চাকমা ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন। কর্নার
থেকে জটলার মধ্যে একজনের হালকা শট পোস্টে লাগে, সেখান থেকে বাংলাদেশের এক
ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করে পুরোপুরি বিপদমুক্ত করেন।
৪২ মিনিটে বাংলাদেশ
ব্যবধান দ্বিগুণ করে। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে সাবিনা খাতুন
ফাঁকায় বাঁদিকে কৃষ্ণাকে দেন, এই ফরোয়ার্ড ফাঁকায় থেকে বাঁ পায়ের জোরালো
শটে গোলকিপারের ওপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন।
বিরতির পর স্বাগতিকদের সবচেয়ে
বড় তারকা সাবিত্রা ভান্ডারি মাঠে নামেন। তাতে তাদের আক্রমণে কিছুটা গতি
আসে। ৫২ মিনিটে অনিতা বাসনেতের ক্রসে রাশমি কুমারির হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে
যায়। ৬৮ মিনিটে সতীর্থের থ্রু পাস থেকে সাবিত্রা ভান্ডারি শট নেওয়ার আগে
গোলকিপার রুপনা চাকমা এগিয়ে এসে প্রতিহত করেন।
৭০ মিনিটে নেপাল এক গোল
শোধ দেয়। সতীর্থের পাস থেকে বাংলাদেশের এক ডিফেন্ডারের পা হয়ে বক্সের ভেতরে
বল পেয়ে যান অনিতা বাসনেত, ডান পায়ের জোরালো শটে জাল কাঁপাতে কোনও ভুল
হয়নি এই ফরোয়ার্ডের। বাংলাদেশ গোলকিপার বলের লাইনে ঝাঁপালেও এই যাত্রায় আর
রক্ষা করতে পারেননি।
৭৭ মিনিটে আবারও বাংলাদেশ শিবিরে উৎসব। মনিকা
চাকমার ডিফেন্সচেরা পাস থেকে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে আগুয়ান গোলকিপারের
পাশ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করে স্বাগতিকদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন কৃষ্ণা রানী
সরকার। শেষ পর্যন্ত ৩-১ স্কোরলাইন রেখে প্রথমবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব
জয়ের আনন্দে মেতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।