শেষবারের মতো উইন্ডসর প্রাসাদের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মরদেহ। ওয়েলিংটন আর্চে আনুষ্ঠানিকতা শেষে রানির কফিন তোলা হয় রাষ্ট্রীয় শবযানে। গ্রেনেডিয়ের গার্ড বাহিনীর সদস্যরা রানির কফিন ওই শবযানে তুলে দেন। এরপর উইন্ডসর প্রাসাদের দিকে রওয়ানা দেয় গাড়িটি। স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা নাগাদ এটি উইন্ডসরে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। রানির শেষযাত্রা দেখতে রাস্তার দুপাশে ভিড় করেছেন হাজার হাজার মানুষ।
মঙ্গলবার ভোরবেলা থেকেই উইন্ডসর প্রাসাদের দিকে পায়ে হেঁটে পৌঁছাতে শুরু করে জনতা। তাদের মধ্যে যেমন তরুণরা ছিল, তেমনি দেখা গেছে প্রবীণ সৈনিকদেরও।
এখানেই চার বছর আগে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছিল সাধারণ মানুষ, কিন্তু সেদিনের সঙ্গে আজকের পার্থক্য অনেক। সেদিন সবাই এসেছিল প্রিন্স হ্যারি আর মেগান মার্কেলের বিয়ের দিনে। সেদিন সবাই ছিল উৎফুল্ল, উৎসবের আমেজে। ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে যখন রাজকীয় যুগল সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে রওনা হয়, সবাই চিৎকার করে তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিল।
আজ আবারও সবাই সমবেত হয়েছে। কিন্তু এবার তারা অপেক্ষা করছে রানিকে চ্যাপেলে সমাহিত করার জন্য। সেখানে তিনি প্রয়াত স্বামী ডিউক অব এডিনবরা, তার পিতা রাজা ষষ্ঠ জর্জ, রানি মাতা ও বোন প্রিন্সেস মার্গারিটের কবরের পাশে সমাহিত হবেন।
লধমড়হবংি২৪ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে ছেড়ে যাচ্ছে রানির কফিন। ছবি সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১১টার দিকে রানির মরদেহ নিয়ে দিনের প্রথম শোকযাত্রা শুরু হয়। ওয়েস্টমিনস্টার হল থেকে রানির কফিন রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যানুষ্ঠানের জন্য ধীরে ধীরে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভবনের ভেতরে উঁচু বেদির সামনে একটি প্লাটফর্মের ওপর রাখা হয় রানির কফিন। ১৯৪৭ সালে তৎকালীন প্রিন্সেস এলিজাবেথ এবং প্রয়াত প্রিন্স ফিলিপ মাউন্টব্যাটেনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যে স্তবগান করা হয়েছিল, শেষকৃত্যানুষ্ঠানে সেটি গাওয়া হয়।
এর আগে রানির জন্য ধর্মগ্রন্থ থেকে বাণী পাঠ করে শোনান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস এবং কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারনেস স্কটল্যান্ড।
এরপর রানির কফিন নিয়ে উইন্ডসরের পথে শুরু হয় শোকমিছিল। এটি আগেরটির চেয়ে বেশ বড়। এই শোকমিছিলে রয়েছে মোট সাতটি গ্রুপ।
মিছিলের পেছনে পেছনে একটি গাড়িতে যাচ্ছেন কুইন কনসোর্ট ক্যামিলা এবং প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথারিন। তাদের সামনে রয়েছেন রাজা চার্লস এবং রাজপরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। তারা কফিনের পেছনে পেছনে হাঁটছেন।
দ্বিতীয় একটি গাড়িতে করে যাচ্ছেন ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেল এবং কাউন্টেস অব ওয়েসেক্স সোফি।
শোকমিছিলের একেবারে সামনে রয়েছে রাজকীয় ক্যানাডীয় মাউন্টেড পুলিশের দল। আর রানির কফিনের দু’পাশে রয়েছে কফিন বহনকারীদের দল ও দেহরক্ষীরা।