ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
যেভাবে কুমিল্লা ছাড়লো তারা-
Published : Friday, 7 October, 2022 at 12:00 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ তরুণদের এলাকা ছাড়ার বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক  কমান্ডার মঈন বলেন, গত ২৩ আগস্ট সকালে নিলয়সহ পাঁচ তরুণ নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে কুমিল্লা টাউন হল এলাকায় যায়। পরবর্তীতে সোহেলের নির্দেশনায় তারা দুই ভাগ হয়ে লাকসাম রেল ক্রসিংয়ের কাছে হাউজিং স্টেট এলাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। নিলয়, সামি ও নিহাল একসঙ্গে গেলেও ভুলবশত তারা চাঁদপুর শহর এলাকায় চলে যায়। তারা দিকভ্রান্ত বুঝতে পেরে রাত্রিযাপনের উদ্দেশ্যে চাঁদপুরের একটি মসজিদে অবস্থান করলে কর্তব্যরত পুলিশ তাদের সন্দেহজনক আচরণের কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরবর্তীতে দায়িত্বরত পুলিশ তাদেরকে পাশের একটি আবাসিক হোটেলে রেখে যায় এবং পরিবারের সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষকে কথা বলে তাদের বাসায় পাঠানোর কথা বলে। কিন্তু তারা রাতের বেলা হোটেল থেকে কৌশলে পালিয়ে পূর্ব নির্ধারিত জায়গায় যায়।
সেখানে গেলে জনৈক সোহেল ও অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাদেরকে লাকসামের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই বাড়িতে পূর্ব থেকেই অবশিষ্ট তিনজন অবস্থান করছিল। পরবর্তীতে নিলয়, নিহাল, সামি ও শিথিলকে কুমিল্লা শহরের একটি মাদ্রাসার মালিক নিয়ামত উল্লাহর কাছে পৌঁছে দেয় সোহেল।
গতকাল ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয় নিয়ামত উল্লাহর তত্ত্বাবধানে একদিন থাকার পর সোহেল চারজনকে নিয়ে ঢাকায় আসে এবং নিহাল, সামি ও শিথিলকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির কাছে বুঝিয়ে দিয়ে নিলয়কে আলাদা করে একটি লঞ্চের টিকিট কেটে পটুয়াখালীতে পাঠায়। পটুয়াখালীতে গ্রেফতারকৃত বনি আমিন নিলয়কে গ্রহণ করে স্থানীয় এক মাদ্রাসায় নিয়ে যায় এবং গ্রেফতারকৃত হুসাইন ও নেছার ওরফে উমায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। বণি আমিন নিলয়কে তিনদিন তার বাসায় রাখে। তার বাসায় অতিথি আসায় পরবর্তীতে নিলয়কে হুসাইনের মাদ্রাসায় রেখে আসে। এরপর মূলত নিলয় মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গত ০১ সেপ্টেম্বর কল্যাণপুরে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
নিলয়ের দেয়া তথ্যমতে বনি আমিনকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক এলাকা হতে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে বণি আমিনের তথ্য মতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এলাকা হতে নেছার উদ্দিন ওরফে উমায়েরকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের পরবর্তীতে হুসাইন আহমদ, রিফাত, হাসিব, রোমান শিকদার ও সাবিতকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ  থেকে গ্রেফতার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এসে নিলয় সাংবাদিকদের জানান, পরিবার-পরিজন ছেড়ে হিজরত করার কথা বললে তার মনের মধ্যে এক ধরণের পরিবর্তন আসে। তাদের কথা এবং নির্দেশনা বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারেন এটা কোনো সঠিক পথ নয়। তাই হুসাইনের মাদ্রাসা থেকে নিলয় পালিয়ে বাড়ি ফিরেন। এই পথে আর কাউকে পা না বাড়ানোর জন্যও আহ্বান জানান নিলয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা র‌্যাবকে জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত হাসিব ও রিফাত এক বছর পূর্বে কুমিল্লার কোবা মসজিদের ইমাম হাবিবুল্লাহর কাছে সংগঠনের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা পায়। পরবর্তীতে হাবিবুল্লাহ তাদের উগ্রবাদী উদ্বুদ্ধ করে ফাহিম ওরফে হাঞ্জালার নিকট নিয়ে যায়। ফাহিম তাদেরকে কুমিল্লার বিভিন্ন মসজিদে নিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে মুসলমানদের উপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞান প্রদান করত ও ভিডিও দেখাত। এইভাবে তাদেরকে সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিতে পরিবার হতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে আগ্রহী করে তুলে।