Published : Monday, 17 October, 2022 at 12:00 AM, Update: 17.10.2022 12:02:40 AM

মোঃ হুমায়ুন কবির মানিক ||
কুমিল্লার
লাকসাম ও লালমাইতে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন
শ্রেণি-পেশার পুরুষদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে অভিনব কৌশলে কাছে ডেকে
এনে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া
প্রতারক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পু্লশি।
গতকাল রাতে লাকসাম থানা পুলিশ
অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতা পৌর এলাকার কুন্দ্রা গ্রামের মৃত
নুরুজ্জামানের মেয়ে তাহমিনা আক্তারকে গ্রেফতার করে। একই দিন পৃথক অভিযানে
তাহমিনার স্বামী লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের সমেষপুর গ্রামের
কন্ট্রাক্টর বাড়ির বিল্লালের ছেলে রবিউল আলম ওরফে সোহেলকে গ্রেফতার করে
লালমাই থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, প্রতারক তাহমিনার ফাঁদে পা দিয়ে কেউ
দেখা করতে আসলেই তার স্বামী সহ অন্যান্য কয়েকজন মিলে তাদের সাথে থাকা
মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা সহ মূল্যবান জিনিসপত্র রেখে দেয় এবং মেরে ফেলার
হুমকি দিয়ে বাড়ির লোকদের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা
এনে দিতে বলে, অন্যথায় এই প্রতারক মহিলার সাথে অনৈতিক ভিডিও করে সোশ্যাল
মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিলে, আগত লোকেরা বাধ্য হয়ে টাকা নিয়ে আসে।
প্রতারক চক্রটির টার্নিং পয়েন্ট ছিলো লাকসাম বাজার থেকে মুদাফরগঞ্জ রাস্তার
মাথা পর্যন্ত। এ পয়েন্টে তারা যাত্রী বেশে সিএনজি অটোরিকশায় উঠেও বিভিন্ন
চালক-যাত্রীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে
নিতো।
এদিকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর এক ভুক্তভোগী বাদি হয়ে লাকসাম থানায় লিখিত
অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে লাকসাম থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ওই
প্রতারক চক্রের সদস্য লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়ন চুনাতি গ্রামের
কামাল হোসেনের ছেলে আশিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে এসে তার কাছ
থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ
করে।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) পুনরায় লাকসাম থানার এসআই আমিরুল ইসলাম রাতভর
অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের মূল হোতা তাহমিনা আক্তারকে গ্রেফতার
করতে সক্ষম হয়। একই দিন পৃথক অভিযানে তাহমিনার স্বামী রবিউল আলম ওরফে
সোহেলকে গ্রেফতার করে লালমাই থানা পুলিশ। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল এক ট্রাভেলস
ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নেওয়ার পর ৪টি খালি স্ট্যাম্প
রেখে দেয় এই চক্রটি।
ভুক্তভোগী ওই ট্রাভেলস ব্যবসায়ীও থানায় অভিযোগ
করলে, প্রথমবার ক্ষমা করে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার কথা
বলে নগদ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও বাকি টাকা এখনো না দিয়ে গোপনে এই কাজ
চালিয়ে চাচ্ছিলেন এই প্রতারক চক্রটি।
এ বিষয়ে লাকসাম থানার অফিসার
ইনচার্জ (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন ভুইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তার
বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।