আপাতত
বিভ্রান্তির অবসান হয়েছে। সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, চুক্তি
অনুযায়ী আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার
কভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেতে যাচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা
বিবিসিকে বলেছেন, ভারতে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন আনুষ্ঠানিকভাবে
প্রয়োগ শুরুর ১৫ দিনের মধ্যেই রপ্তানি শুরু হবে। অন্যদিকে সেরাম
ইনস্টিটিউটের সিইও আধার পুনাওয়ালা এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ভ্যাকসিন
রপ্তানির অনুমতি আছে সব দেশেই। গত মঙ্গলবার সেরামকে ৫০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকাও
পাঠিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওদিকে চলতি বছরের মধ্যেই সেরাম ও
কোভ্যাক্সের উৎস থেকে করোনার টিকা এনে ৪০ শতাংশ মানুষকে দেওয়ার
লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। আর সেই লক্ষ্য পূরণে শুধু ভারতের সেরাম
ইনস্টিটিউটের উৎপদন করা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ টিকাই
নয়, অন্য উৎস থেকেও দেশে দ্রুত টিকা আনার তৎপরতা চলছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে
পত্রিকার প্রকাশিত প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সেরাম ও
কোভ্যাক্সের বাইরে চীনের একাধিক কম্পানির টিকা আমদানি, দেশে উৎপদন ও
ট্রায়ালের বিষয়ে ভেতরে ভেতরে আগে থেকেই কাজ এগিয়ে চলছে, যা দুদিন ধরে নতুন
গতি পেতে শুরু করেছে। এ ছাড়া রাশিয়ার টিকার বিষয়েও নাড়াচাড়া পড়েছে। এ
ক্ষেত্রে সরাসরি সরকারিভাবে না হলেও বেসরকারি উদ্যোগের ওপর বেশি জোর দেওয়া
হচ্ছে। পাশাপাশি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন টিকা নিয়েও কিছুটা সক্রিয়
হয়েছেন সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ছাড়া জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী
কমিটির সভায় করোনা মোকাবেলায় ছয় হাজার কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। চলতি
বছরের মধ্যে দেশের ৪০ শতাংশ মানুষের জন্য শুধু সেরাম ও কোভ্যাক্সের উৎস
থেকে আনা টিকা পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
করোনা
মহামারির এই সময়ে টিকা পাওয়া নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। জানা গেছে,
চলতি বছরের মধ্যে দেশের ৪০ শতাংশ মানুষের জন্য শুধু সেরাম ও কোভ্যাক্সের
উৎস থেকে আনা টিকা পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা রয়েছে, যার মধ্যে
সেরাম থেকে আসবে ৯ শতাংশ এবং কোভ্যাক্স থেকে আসবে ৩১ শতাংশ মানুষের টিকা।
কোভ্যাক্সের টিকা আসবে দুই ধাপে। প্রথম ধাপের ২০ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা
আসার কথা রয়েছে ফেব্রুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে এবং বাকিটা ডিসেম্বরের মধ্যে।
এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গঠিত কোভ্যাক্স থেকে টিকা পাওয়ার আগাম সব
বুকিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা
হচ্ছে। কোভ্যাক্সের নীতিমালা অনুসারে প্রথম ধাপে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ
মানুষের টিকা পাবে বাংলাদেশ। সেই হিসাবে শুরুতে তিন কোটি ৪০ লাখ মানুষের
জন্য টিকা পাওয়া যাবে।
টিকা নিয়ে জটিলতা ও বিভ্রান্তি কেটে যাওয়া
স্বস্তির বিষয়। এখন টিকা আসার পর প্রয়োগ ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি মাথায়
রেখে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।