নিজস্ব
প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত এক দিনে আরও ৩১ জনের
মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ১০০৭ জন। টানা ছয় দিন দৈনিক
শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের নিচে থাকার পর বৃহস্পতিবার আবার তা হাজার
ছাড়ানোর কথা জানালো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
নতুন বছরের প্রথম দিন ৯৯০ জন
রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২ জানুয়ারি তা নেমে আসে ৬৮৪
জনে। এর পরের চার দিন তা ৮০০ থেকে ৯০০ এর ঘরে ওঠানামা করতে দেখা যায়। এই
৬দিনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যাও ৩০ এর নিচে ছিল।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা
পর্যন্ত শনাক্ত এক হাজার ৭ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের
সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৯০৫ জন হয়েছে।
আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩১ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ৭১৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৯৬৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে
উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ হওয়া রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪
লাখ ৬৪ হাজার ৪৪৬ জন হয়েছে।
৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম
সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ১০ মে পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক হাজারের নিচে
ছিল। এরপর থেকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। জুন-জুলাইয়ে পৌঁছায়
সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর
সংখ্যা কমে এলেও নভেম্বর মাসে তা বাড়তে থাকে। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে
তা আবার কমে অক্টোবরের পর্যায়ে চলে আসে।
গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন
কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। শনাক্ত রোগীর
সংখ্যা ৫ লাখ পেরিয়ে যায় ২০ ডিসেম্বর।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮
মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯
ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের
মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ কোটি ৭২ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৮ লাখ ৮৪ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৭তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৬তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৪টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৭টি
জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৪০টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট
১৮১টি ল্যাবে ১৫ হাজার ৩৮১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা
হয়েছে ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৮১০টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায়
শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৬৭
শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১
দশমিক ৪৮ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে
২৬ লাখ ২০ হাজার ৮৭৬টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৬ লাখ ৯৬ হাজার
৯৩৪টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২১ জন পুরুষ আর নারী ১০ জন। তাদের মধ্যে ২৯ জন হাসপাতালে ও ২ জন বাড়িতে মারা গেছেন।
তাদের
মধ্যে ২০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে,
২ জন করে মোট ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ ও ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জন
করে মোট ২ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের
মধ্যে ১৮ জন ঢাকা বিভাগের, ৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন করে মোট ৬ জন
রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের এবং ১ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা
ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৭ হাজার ৭১৮ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৮৬৭ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৮৫১ জন নারী।
তাদের
মধ্যে ৪ হাজার ২২১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ১ হাজার ৯৫৬ জনের
বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯০১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৮৫
জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫৮
জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৬ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর
মধ্যে ৪ হাজার ২৫০ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৪২৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৪৫
জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৩৮ জন খুলনা বিভাগের, ২৩৯ জন বরিশাল বিভাগের, ২৯৪ জন
সিলেট বিভাগের, ৩৫০ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৭৬ জন ময়মনসিংহ বিভাগের
বাসিন্দা ছিলেন।