ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
আনুশকাহর মায়ের পা ধরে দিহানের বাঁচার আকুতি
Published : Saturday, 16 January, 2021 at 2:02 PM
আনুশকাহর মায়ের পা ধরে দিহানের বাঁচার আকুতিরাজধানীর কলাবাগানে স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও  হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার দিহানকে নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।  ওই ঘটনার পর আনুশকাহর মায়ের পা ধরে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিল দিহান। 
শুক্রবার সাংবাদিকদের আনুশকাহর মা ওই দিনের ঘটনার বিস্তারিত জানান। আনুশকাহর মা বলেন, ঘটনার পর আমি কান্নাকাটি করতে করতে হসপিটালে আসি। গেটের মধ্যে ঢুকতেই দিহান আমার পা জড়িয়ে ধরে।  পা জড়িয়ে ধরে বলে, আন্টি আমাকে বাঁচান।  আমি তাকে সরিয়ে দিয়ে ভেতরের দিকে গিয়ে আমার মেয়েকে খুঁজতে থাকি।  তখন আমাকে হাসপাতালের আয়া, নার্স ও অন্য যারা ছিল সবাই এসে আমাকে সান্তনা দিতে থাকে। তিনি বলেন, এখন দিহানের পরিবার থেকে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে।  তার চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা আসলে ঠিক না। আমার মেয়েকে আমরা তো ছোটবেলা থেকেই চিনি,  তাকে বড় করেছি, তার সম্পর্কে আমরা যা জানি, আশপাশের মানুষরা যা জানে, বন্ধুবান্ধব যা জানে, আত্মীয়-স্বজনরা যা জানে, কেউ কিন্তু আজ পর্যন্ত খারাপ কথা আজ পর্যন্ত বলেনি।  আনুশকাহর মা সেদিনের বর্ণনা দিয়ে বলেন শুনুন তার বিস্তারিত- দিহানের সঙ্গে যখন আমার ১টা ১৮ মিনিটে সে আমাকে ফোন করে বলে, আন্টি আমি দিহান। 
আমি বললাম, দিহান কে? তখন বলল, আন্টি আমি আনুশকার সাথে ছিলাম।  ও সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে।  আপনি তাড়াতাড়ি আসেন।  আমি আনোয়ার খান মডার্ন হসপিটালে। 
তখন আমি বললাম, ও তো কোচিংয়ে গিয়েছিল। তোমার সঙ্গে কীভাবে গেল? তখন সে আমার কথার জবাব দেয়নি।  আমি বললাম, ঠিক আছে, তুমি ওকে ইমার্জেন্সিতে দেখাও। আমি এক্ষুনি আসছি।  তখন সে বলল, আমরা ফ্রেন্ডরাসহ ইমার্জেন্সিতেই আছি, আমি তখন অফিস থেকে সিএনজি করে রওনা দিই।   রাস্তার মাঝে অনেকবার তাকে ফোন করেছি, ফোনটা কখনও রিসিভ করে, কখনও বন্ধ পাই।  পরে অনেক্ষণ পর আবার তার ফোন খোলা পাই।  তখন জিজ্ঞাসা করি, ইমার্জেন্সিতে দেখাইছো? তখন সে বলে, জ্বী দেখাইছি। আপনি তাড়াতাড়ি আসেন। ও খুব অসুস্থ।  অবস্থা ভালো না।  সায়েন্স ল্যাব পর্যন্ত আসার পর আবার ফোন দিলাম।  তখন ও বলছে, আন্টি ও মারা গেছে।  তখন আমি কান্নাকাটি করতে করতে হসপিটালে আসি। গেটের মধ্যে ঢুকতেই ও আমার পা জড়িয়ে ধরে।  পা জড়িয়ে ধরে বলে, আন্টি আমাকে বাঁচান।  তখন আমি তাকে সরিয়ে দিয়ে ভেতরের দিকে গিয়ে আমার মেয়েকে খুঁজতে থাকি।  তখন আমাকে হাসপাতালের আয়া, নার্স ও অন্য যারা ছিল সবাই এসে আমাকে সান্তনা দিতে থাকে।  প্রসঙ্গত, গত ৭ জানুয়ারি দুপুরে দিহান ওই ছাত্রীকে মৃত অবস্থায় আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন কিশোরীর প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। খবর পেয়ে দিহানের তিন বন্ধু হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার একমাত্র আসামি করা হয় দিহানকে। যেখানে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয়। ৮ জানুয়ারি দিহান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।