সম্প্রতি নরওয়েতে ফাইজারের কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের একদিনের মাথায় ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে আনার যে আশা ফাইজারের টিকা আবিষ্কারের পর দেখা গিয়েছিলো তা নিয়ে কিছুটা দ্বিধা তৈরি হয়েছে।
নরওয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়। তবে তারা এটিও নিশ্চিত করেছেন যে মৃতদের অধিকাংশেরই বয়স ৮০ বছরের বেশি। তবে বয়োঃবৃদ্ধ ছাড়াও মৃত ৯ জনের শরীরে প্রচন্ড এলার্জিক প্রতিক্রিয়া, অস্বস্তিভাব এবং তীব্র জ্বর লক্ষ্য করা গিয়েছিলো। আরো ৭ জনের সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেও ইঞ্জেকশন পুশ করার স্থানে ছিলো প্রচণ্ড ব্যাথা।
নরওয়ের মেডিকেল সংস্থার প্রধান ডাক্তার সীগার্ড হোর্তেমো জানিয়েছেন অন্যান্য টিকার মতোই কোভিড টিকা নেয়ার পর স্বাভাবিক উপসর্গের সাথে বার্ধক্যজনিত সমস্য যুক্ত হওয়াতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নরওয়েতে টিকা গ্রহণের পর এই সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে শংকার সৃষ্টি হয়েছে। তবে নরওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে টিকা সাধারণের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে অতিবৃদ্ধ অথবা পূর্ব থেকেই মারাত্মক অসুস্থ এমন মানুষের জন্য টিকার ফলাফল ইতোবাচক নাও হতে পারে।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) নরওয়ের টিকা প্রদানের নির্দেশিকায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং অতি বয়স্কদের টিকাদানের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। ইতোপুর্বে নরওয়ে বয়স্কদের টিকাদানের মাধ্যমেই কর্মসূচী চালু করেছিলো তবে গত সপ্তাহের মৃত্যুর ঘটনায় এবার নীতিমালায় পরিবর্তন আনছে দেশটি।
ফাইজার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন যে টিকা গ্রহণে কোন সমস্যা নেই। সেই সাথে টিকা গ্রহণের পর মৃত্যুবরণ করার বিষয়ে তারা আরও খতিয়ে দেখবেন তবে অতিবৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এমন ফলাফল অনেক সময় ঘটোতে পারে বলেও মন্তব্য করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আবার নরওয়ে কর্তৃপক্ষও বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে করছেন।
টিকা বিশেষজ্ঞদের বরাতে ব্রিটেনভিত্তিক জাতীয় ট্যাবলয়েড পত্রিকা “দ্য সান” জানিয়েছে, টীকা গ্রহণের ব্যাপারে সাধারণ মানুষ নিশ্চিত থাকতে পারেন। অতিবৃদ্ধ অথবা মারাত্মক কোন রোগাক্রান্ত না হয়ে থাকলে ফাইজারের টিকা গ্রহণে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবার সম্ভবনা নেই। তাই অন্যান্য টীকার মতোই সামান্য জ্বর অথবা অস্বাভাবিক লাগা বিপজ্জনক কোন কিছুর ইঙ্গিত নয়।