‘কিশোর-কিশোরীদের জানাতে হবে প্রজনন স্বাস্থ্যের সঠিক তথ্য’
Published : Monday, 25 January, 2021 at 2:33 PM
অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন অং সুই প্রু মারমা বলেন, “সরকারি-বেরসকারি
প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ের মাধ্যমেই আমাদের সেবাগুলো নিশ্চিত করতে হবে।
বাল্যবিবাহ, প্রজনন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে
কাজ করতে হবে।
“জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অনেক কার্যক্রম চলমান
রয়েছে। প্রজনন স্বাস্থ্য, মাসিক ব্যবস্থাপনা, বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য সহ
বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা
রয়েছে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন, সমাজ সেবা বিভাগ, মৎস্য বিভাগ,
প্রাণিসম্পদ বিভাগ, কৃষি বিভাগ, সমবায় বিভাগ এবং প্রশাসনের সকলকে
অন্তর্ভূক্ত করে কাজ করতে পারলে কিশোরী ও নারীদের সামগ্রিক উন্নয়ন সহজ
হবে।”
বাল্য বিবাহ রোধে কাউন্সেলিং করায় গুরুত্ব দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
মোহাম্মদ রেজা সরোয়ার বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই যৌন সহিংসতা সামাজিকভাবে
সমাধা হয়ে যায়, যার ফলে একজন নারী তার প্রাপ্য সুবিচার থেকে বঞ্চিত হয়।
কোনো নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটে থাকলে দ্রুত আমাদের জানাবেন, আমরা
সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মং টিং ঞো বলেন, ‘নারী হলো গণতন্ত্রের
মেরুদণ্ড। তাই কৈশোরেই তাদের স্বাস্থ্য ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে গড়ে
তুলতে হবে, যাতে তারা আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে ওঠে।”
রোয়ংছড়ি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিছকাতুল তামান্না বলেন, “নারীরা
মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। সুতরাং তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হলে তারা
সমাজের জন্য জনসম্পদে পরিণত হবে।”
স্বাস্থ্য, খাদ্য, পুষ্টি নিয়ে কিশোরীদের সচেতন করে তোলায় গুরুত্ব দিয়ে
সমাজ সেবার উপ-পরিচালক মিলটন মুহুরী বলেন, “তাহলেই কিশোরীদের শারিরীক
বৃদ্ধি সঠিকভাবে হবে। পাশাপাশি কিশোরী ও নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও
আমাদের নজর দিতে হবে। মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে কিশোরীরা
স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারবে।”
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা একেএস, গ্রাউস ও
তহজিংডং সংস্থার পরিচালনায় বান্দরবানে চলমান রয়েছে ‘আমাদের জীবন’, ‘আমাদের
স্বাস্থ্য’, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ’ প্রকল্প। এসব প্রকল্পে বান্দরবান পার্বত্য
জেলার ৯০টি কিশোরী ক্লাবে প্রায় ৩ হাজার ৬শ কিশোরী সদস্য সম্পৃক্ত রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, পার্বত্য অঞ্চলের পিঁছিয়ে পড়া কিশোরী ও যুবতী নারীদের
কিশোরী বয়স থেকে সব ধরনের নির্যাতন, সহিংসতার প্রভাবমুক্ত জীবনযাপন করার
ক্ষেত্রে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করাই এসব প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য।
নারী প্রগতি সংঘের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সঞ্জয় মজুমদার সমাপনী বক্তব্যে
বলেন, “১০-২৫ বছর পর্যন্ত সময়টা সারা জীবনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা
সময়। এ সময় তাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়াটা খুব জরুরি। আমরা কিশোরী
ক্লাবের মাধ্যমে তাদের জীবন দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছি। তাদেরকে
তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. অং
থালু, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান য়ই সা প্রু, রোয়াংছড়ি উপজেলার
ভাইস চেয়ারম্যান অং থুই মং, দুনীর্তি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অং চ মং,
প্রকল্প সমন্বয়কারী ম্যামিসিং মারমা, রমেশ চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।