কুমিল্লায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা চরম দুর্ভোগে অসহায় মানুষ
Published : Tuesday, 26 January, 2021 at 12:00 AM
রণবীর ঘোষ কিংকর।
ঋতুচক্রে পৌষ ও মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। তবে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় শীতের আগমন। চলে চৈত্র অবধি। মাঘের শুরু থেকে সারা দেশের ন্যায় কুমিল্লায় শীত এবার জেঁকে বসেছে। টানা কয়েক দিনের শৈত্য প্রবাহে কুমিল্লায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে।
সারা দিনের মৃদু বাতাসে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলছে। শীতের তীব্রতায় কর্মজীবী মানুষ হারাচ্ছে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা। সকাল ১০টার আগে সূর্য্যরে মুখ দেখা মিলছে না। রাত ১০টার পর ঘন কুয়াশার চাঁদরে ঢেকে যাচ্ছে পুরো জেলা। দিন দুপুরে শীতে মানুষ জুবুথুবু হয়ে পড়ছে। সারা দিনও শীতের জড়তা ছাড়ছে না মানুষের শরীর থেকে। সন্ধ্যার সাথে সাথে তাপমাত্রা কমে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার ফলে সন্ধ্যার সাথে সাথেই কর্মমুখী মানুষ ঘর মুখী হয়ে পরে।
রাত নয়টা বাজতে হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে মাঘের শুরু থেকে তাপমাত্রা ক্রমাগত হ্রাস পাওয়া নিম্ন আয়ের লোকজন কাবু হয়ে পড়েছে। হতদরিদ্র দিনমজুররা শীতের দাপটে জবুথবু হয়ে পড়েছে। সকাল- সন্ধ্যায় শিশু-বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সের লোকজন ও শীতবস্ত্রহীন মানুষ শীতের দাপট থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
এদিকে শীতের তীব্রতার কারনে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান জানান- বর্তমানে হাসপাতালে যত রোগী আসছে সিংহভাগই ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত এবং এরমধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
এদিকে আগাম শীতের আগমনে লেপ তোষকের কারিগর ও শীতের কাপড় বিক্রেতাদের মাঝে বেড়ে গেছে ব্যস্ততা। গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় বাড়ছে। ক্রেতারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গরমের কাপড় ক্রয় করতে। পুরনো কাপড়ের দোকানে নিম্নআয়ের মানুষ ভিড়।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর থেকে এবছর ১ লক্ষ ৪ হাজার ৯০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আরও ৩০ হাজার ৭০০ কম্বল ক্রয় করে বিতরণ করার কথা রয়েছে। এছাড়া কুমিল্লার ৮টি পৌরসভায় শীতবস্ত্র কম্বল ক্রয় করতে জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন দপ্তর থেকে ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদাণ করা হয়েছে। তারপরও শীত নিবারণে অসহায় হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র পরিবারগুলো।
জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা মনিরুল হক শীত বস্ত্রের তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন- এবার শীতের তীব্রতা বেশ। এমন তীব্র শীতে ছিন্নমূল পরিবারগুলো বেশি বেকায়দায় রয়েছে। আমরা যে পরিমান কম্বল সরবরাহ করেছি তা দিয়ে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল পরিবারগুলোতে সংকুলান হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা যায় যে, ছিন্নমূল পরিবারগুলো একটি কম্বল এক বছরেই শেষ করে ফেলে। ওইসব পরিবারগুলোই বেশি সমস্যায় পড়ছে। আমরা যেখানেই খবর পাচ্ছি তাৎক্ষণিক সেখানেই সরবরাহ করছি।