স্টাফ রিপোর্টার।।
মনোহরগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একদিকে জনবল সংকটের কবলে। অবকাঠামো উন্নয়ন উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার বৃত্তে আটকে আছে ১৫বছর ধরে। শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও কর্মরত ডাক্তারগণ জরুরি স্বাস্থ্য সেবা দিতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে। অপরদিকে হলুদ সাংবাদিকতার শিকার হয়ে দায়িত্ব পালনে উৎসাহ হারাচ্ছেন ডাক্তার- কর্মচারীগণ।
২০০৫ সালে মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্থাপিত হয়। একই বছর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ৬ একর জায়গা অধিগ্রহণ প্রস্তাব করা হয়। কয়েকজন অসাধু মালিক তাদের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট দায়ের করেন। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। ঠিকাদার নির্মাণ কাজ শেষ না করেই চলে যায়। প্রায় ১০ বছর নির্মাণকাজ বন্ধ থাকে।
জাতীয় সংসদ সদস্য এবং বর্তমান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম অনেক চেষ্টা তদবির করে পুনরায় হাসপাতালটির উন্নয়ন বরাদ্দ মঞ্জুর করেন। অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ আমার শুরু করান। বর্তমানে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। মাননীয় মন্ত্রী রিটকারীদের ডেকে নিয়ে হাসপাতালের জায়গার বিরুদ্ধে দায়ের করা রিট তুলে নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা এখনো রিট প্রত্যাহার করেননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয়, টেকনেসিয়ান, মিডওয়াইফ, পিয়ন, দারোয়ান, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ শতাধিক পদ শূন্য রয়েছে। যা বরাদ্দকৃত মঞ্জুরি পদের অর্ধেকের বেশি। হাসপাতালটি ৩১ শয্যা বিশিষ্ট নামে মাত্র। এখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি অবকাঠামো এবং রোগীর প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেড নেই। তা সত্বেও কর্মরত ডাক্তারগণ দরিদ্র- অসহায় মানুষের জরুরী স্বাস্থ্য সেবা দিতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী প্রায় দু’বছর আগে এখানে যোগদানের পূর্বে এই পরিবেশটি ছিল না। তিনি জানান- ‘হাসপাতাটিতে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই, তা সত্ত্বেও মহিলা ডাক্তারগণ রাতে জরুরি চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। করোনাকালে নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তারপরও তিনি জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির কো- অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। যার জন্য সপ্তাহে দুই দিন তাঁকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন অফিসে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগ চালু করেন। আট্রাসনোগ্রাম, ইসিজিসহ অনেক সাধারণ পরীক্ষা নিরীক্ষা এখন মনোহরগঞ্জ হাসপাতালে হচ্ছে। তাঁর এই প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা সর্ব মহলেই প্রশংসিত হয়েছে।
ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী জানান- হাসপাতালে কোন দালাল নেই, কেউ কোন অবৈধ সুবিধা নিতে পারছে না। তিনি নিজে এসব তদারক করছেন।
কুমিল্লাস্থ মনোহরগঞ্জ উপজেলা জনকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিছু হলুুদ সাংবাদিকের দাপটে মনোহরগঞ্জের উন্নয়ন কর্মকা- ব্যাহত হচ্ছে। যাদের প্রয়োজনীয় কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতাও নেই। মাঝে মাঝে তারা অসত্য বানোয়াট নিউজ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিব্রত করছে। এতে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্সসহ কর্মকর্তা কর্মচারীগণ তাদের উৎসাহ উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলছেন।