রাজধানীর মোহাম্মদপুর নুরজাহান রোডের বাসিন্দা ইউসুফ খন্দকার এবং স্ত্রী রেহানা পারভীন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন। প্রতিবছরের মতো এবারও সকাল সাতটায় চারুকলার গেটের সামনে উপস্থিত হয়ে হতবাক বনে যান। প্রতিবছর বসন্ত উৎসব উপলক্ষে চারুকলা উৎসবমুখর থাকলেও আজ রোববার এদিন চারদিকে সুনসান নিরবতা।
জানতে পারলেন এবার চারুকলার বকুলতলায় নয়, উৎসব হচ্ছে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিল্পকলা একাডেমীর উন্মুক্ত মঞ্চে। পরে তিনি পায়ে হেটে সেখানে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠান দেখে প্রতিবছরের মতো এবারও মানসিক প্রশান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরলেন।
জাতীয় বসন্ত উদযাপন পরিষদ আয়োজিত ‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ শীর্ষক বসন্ত উৎসব (১৪২৭) নাট্য ব্যক্তিত্ব আলী যাকেরের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে বীর মুক্তিযােদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। আসাম দিপুর সঞ্চালনায় আলােচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন স্থপতি সফিউদ্দিন আহমেদ ও মানজার চৌধুরী সুইট।
দীপেন সরকারের বাদ্যযন্ত্রের (যন্ত্রসঙ্গীত) মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। বসন্তের আবাহন পরিবেশন করেন ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়। একক আবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সুরসপ্তক, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, সত্যেন সেন শিল্পীগােষ্ঠি।
দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্বপ্লবিকাশ কলাকেন্দ্র, নৃত্যছন্দ, সুরবিহার, আঙ্গীকাম, ধ্রুপদ কলাকেন্দ্র, ভাবনা, ধূতি, ধ্রুপদী নৃত্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সাধনা সংস্কৃতি মণ্ডল, নৃত্যাক্ষ, স্পন্দন, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, মুদ্রা, মৌমিতা, মারমা সম্প্রদায়, সাঁওতাল সম্প্রদায় ও কথক নৃত্য সম্প্রদায়।
একক সঙ্গীতে ছিলেন বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, শােয়েব, কাইয়ুম, সঞ্জয় কবিরাজ, জান্নাতুল ফেরদৌস কাকলি, নুসরাত বিনতে নূর ও নবনিতা জাইদ চৌধুরী।
বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ জানান, ২৬ বছর পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উৎসব পালিত হচ্ছে। উৎসবে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন বলে জানান।
তিনি জানান, বিকেলে গেন্ডারিয়ার দিনানাথ সেন রোডে সীমান্ত-সাহারা মঞ্চ, সীমান্ত গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে এবং উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে আজমপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুল মাঠে (উত্তরা মঞ্চ) বসন্ত উৎসব পালন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।