ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ন্যাপ নেতা জাকির হোসেন আর নেই
Published : Sunday, 21 February, 2021 at 12:00 AM, Update: 21.02.2021 2:17:28 AM
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ন্যাপ নেতা জাকির হোসেন আর নেইস্টাফ রিপোর্টার।। মহান মুক্তিযুদ্ধেও সংগঠক,  মুক্তিযুদ্ধকালীন ন্যাপ কমিউনিস্ট ছাত্র ইউনিয়ন যৌথ গেরিলা বাহিনীর কমা-ার, ন্যাপের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কুমিল্লা জেলা ন্যাপের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন আর নেই। শনিবার রাত ৮টায় কুমিল্লা শহরের বাদুড়তলাস্থ সিডিপ্যাথ হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। ব্যক্তি জীবনে নি:সন্তান জাকির হোসেন বহুগুনগ্রাহী ও শুভাকাঙ্খি রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবওে কুমিল্লার রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বার্ধক্যজনিত কারনে তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। ঢাকা ও কুমিল্লায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্বাবধানে চিকিৎসা নেন। ন্যাপ নেতা জাকির হোসেনের মৃত্যুও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন টুটুল।
মরহুমের জানাজা বাদ জোহর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এবং পওে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।  
ন্যাপ নেতা মরহুম জাকির হোসেন ১৯৫০ সালের ১০ জানুয়ারি কুমিল্লা শহরের লাকসাম রোডে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম মৃত মোঃ আলী হোসেন, মায়ের নাম মৃত ফাতেমা খাতুন।  বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী জাকির হোসেন ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৬৫-৬৬ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৬-৬৭ সালে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭-৬৮ সালে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে পূর্ব-পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-র কাউন্সিলর হন। ১৯৬৭ সালে কুমিল্লা শহর ন্যাপ-এর সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৬৮-৬৯ সালে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। ১৯৬৯ এর গণ আন্দোলনে জেলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ১৯৬৯ সালে আইয়ূব বিরোধী ১১ দফা গণআন্দোলনে কারাবরণ করেন। ১৯৭০ সালে কুমিল্লা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং ন্যাপ-কমিউনিস্ট -ছাত্র ইউনিয়ন- যৌথ গেরিলা বাহিনীর কুমিল্লা জেলা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর কুমিল্লা জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪-৮২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  ১৯৮৩-৯০ কুমিল্লার ৮ দলীয় জোট ও ১৫ দলীয় জোটের প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯৮-৯৯ সালে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)-এর কেন্দীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের কুমিল্লা জেলার যুগ্ম সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া  মহাজোটের কুমিল্লা জেলার যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন।
তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক কর্মকা-ে যুক্ত ছিলেন।