এবিএম
আতিকুর রহমান বাশার ঃ কুমিল্লার দেবীদ্বারে নির্বচনী সহিংসতায় দুই গ্রুপের
সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২ জন সহ আহত হয়েছেন ৬ জন। আহতদের দেবীদ্বার উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের সবাইকে কুমিল্লা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলেও গুলিবিদ্ধ দু’জনকে দ্রুত কুমিক
হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে দেবীদ্বার থানা গেইট এলাকায় শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ।
আহতদের
মধ্যে দেবীদ্বার পুরাতন বাজার এলাকার মো. আঃ সালাম’র ছেলে মো. ফয়েজ মালি
(২৫), আব্দুল খালেক’র পুত্র সাহাব উদ্দিন (২০), কুমিল্লা সদর’র ইসহাক মিয়ার
পুত্র মো. মোজাম্মেল হক (২৫), মোহাম্মদ হোসেন’র ছেলে মো. সাইফুল
ইসলাম(২০), মো. আনোয়ার হোসেন’র ছেলে ইরফাত আহমেদ পিয়াস (২২) ও মো.
সাজ্জাদ হোসেন(৩৬) অজ্ঞাত।
আহত ইরফাত আহমেদ পিয়াস জানান, কুমিল্লা
মহানগর আ’লীগ’র সাধারন সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত এবং সদর দক্ষিন উপজেলা
পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল’র নেতৃত্বে আমরা নৌকা প্রতীকের পক্ষে
নির্বাচনী প্রচারনায় এসেছিলাম। আমরা নৌকা প্রতীকের পক্ষে একটি মিছিল শেষে
রেয়াজ উদ্দিন মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ক্যাস্পাসে অবস্থান নেই, এসময় আমারা
স্কুল ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে পাশর্^বর্তি থানার পূর্বপাশের বাজারের একটি
চা দোকানে বসে চা’ খাচ্ছিলাম। এসময় কয়েকজন যুবক এসে আমাদের পরিচয় জানতে
চাইলে আমরা পরিচয় দেই, তখন তাদের একজন ফোনে কারোর সাথে কথা বলার পরই প্রায়
৫০/৬০ জন রাম দা, ছোরা, রড, লাঠি নিয়ে এসেই বহিরাগত সন্ত্রাসী বলেই আমাদের
উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শি
জানান, হামলার সংবাদ পেয়ে পুরাতন বাজার এলাকায় বিপুল সংখ্যক লোকজন রাম দা,
ছোরা, রড, লাঠি নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়, অপরদিকে অপরপক্ষ রেয়াজ উদ্দিন
মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থান নেয়া নেতা-কর্মীদের উত্তেজিত হতে দেখা
যায়। এরই মধ্যে আহত কয়েকজনকে হাসপাতালের দিকে নিতে দেখেছি। এসময় কয়েক
রাউন্ড গুলির শব্দও শোনতে পাই। বিপুল সংখ্যক বিজিপি ও পুলিশ রাস্থায় দেখা
যায়। রাত ৮টার দিকে আ’লীগ নেতা রোশন আলী মাষ্টারের নেতৃত্বে মিছিল সহকারে
আরপি উচ্চ বিদ্যালয়ে আটকে পড়া নেতা কর্মীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
তবে এ
ব্যাপারে প্রশাসনের সাথে এমনকি রাজনৈতিক নেতাদের সাথে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত
যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কারোর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। যাদের সাথে
মোবাইল সংযোগ পেয়েছি মোবাইল ন্যাটের সমস্যার কারনে কারোর সাথেই কথা বলা
সম্ভব হয়নি।
রাত পৌনে ১০টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত উপজেলা সদর এলাকা থম
থমে বিরাজ করতে দেখা যায়। প্রায় জনমানব শুন্য হয়ে পড়ে। তবে যে কোন ধরনের
সংহিংসতার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাননি স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য আজ শুক্রবার (২৬
ফেব্রুয়ারী) রাত ১২টার মধ্যেই নির্বাচনী প্রচারনার শেষ দিন ছিল, তাই
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও সদরের সড়কগুলো ছিল ভোটার ও সমর্থকদের পদাচারন এবং
মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত। দুপুরের পর থেকে একর পর এক আ’লীগ, বিএনপি, আনারস
প্রতীকের স্বতন্ত্র পার্থীর খন্ড খন্ড মিছিল উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক
প্রদক্ষিন করতে দেখা যায়। সন্ধ্যার পর পরই দু’পক্ষের সহিংস ঘটনায় নির্বাচনী
পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে পড়ে। আগামী রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারী) দেবীদ্বার উপজেলা
পরিষদ’র উপ-নির্বাচন সম্পন্ন হবে।