ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
হাইটেক পার্কের বিপুল সম্ভাবনা
Published : Sunday, 28 February, 2021 at 12:00 AM
হাইটেক পার্কের বিপুল সম্ভাবনাসারা বিশ্বে প্রযুক্তির বিকাশ ক্রমেই দ্রুততর হচ্ছে। বাংলাদেশকেও এগিয়ে যেতে হলে সেই প্রযুক্তিগত বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে হবে। সেই সুদূরপ্রসারী ল্য নিয়ে ২০১০ সালে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপরে যাত্রা শুরু হয়। সারা দেশে মোট ৩৯টি পার্ক তৈরির কাজ এগিয়ে চলেছে। এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ উপযোগী হয়েছে সাতটি হাইটেক পার্ক। এর মধ্যে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। করোনাকালে দেশে যখন বিনিয়োগের খরা চলছে, তখনো এসব হাইটেক পার্কে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ আসছে। শুধু বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে এ সময়ে বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে ৬৬১ কোটি টাকার। ওরিক্স বায়োটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান ৩০০ মিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার ৫৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। আশা করা যায়, নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হবে এই হাইটেক পার্কগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিকে প্রযুক্তি বিশ্বের রাজধানী বলা হয়। গুগল, অ্যাপল, ফেসবুক, টুইটার, ইয়াহু, অ্যাডব, নেটফিক্স, ইন্টেল, এইচপি, ইউটিউবসহ বিশ্বের নেতৃস্থানীয় অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর এখানে। কিন্তু উচ্চ শুল্ক এবং আবাসন ও কার্যালয়ের খরচসহ আনুষঙ্গিক খরচ বেশি হওয়ার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন সিলিকন ভ্যালি ছাড়ছে বা অন্যত্র তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। নানা কারণে অনেক বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান চীন থেকেও তাদের কারখানা সরিয়ে নিচ্ছে। আমাদের হাইটেক পার্কগুলো এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের গন্তব্য হতে পারে, যদি আমরা তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারি। এ জন্য উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো যেমন দরকার, তেমনি দরকার জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা। সরকার চেষ্টাও করছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চার লেন সড়ক, কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে টানেল নির্মাণসহ অনেক মেগাপ্রজেক্টের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। পায়রা ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বিদ্যুতে দেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। তার পরও পরমাণু বিদ্যুৎসহ নতুন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। হাইটেক পার্কগুলোতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ল্েয সরকার বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১০ বছর কর মওকুফ, পার্ক ডেভেলপারের জন্য ১২ বছর পর্যন্ত কর মওকুফ, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক মওকুফ, প্রতিটি হাইটেক পার্ককে ওয়্যারহাউস স্টেশন হিসেবে বিবেচনা করাসহ নানা সুবিধা। তার ফলও ফলছে। হাইটেক পার্কে একটি প্লট পাওয়ার জন্য এখন রীতিমতো কাড়াকাড়ি শুরু হয়েছে।
সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে এগোনো যায় না। একসময় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সাবমেরিন কেবল না নেওয়ায় আমাদের অনেক পস্তাতে হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে নানা দিক থেকে দেশ এগিয়ে চলেছে। ১০০টি বিশেষ শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি ৩৯টি হাইটেক পার্ক চালু হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বহু দূর এগিয়ে যাবে। সঠিক পরিকল্পনা ও তদারকির মাধ্যমে এই সম্ভাবনাকে আমাদের কাজে লাগাতেই হবে।