Published : Saturday, 6 March, 2021 at 12:00 AM, Update: 06.03.2021 1:36:00 AM
রাশেদুল হাসান ফরহাদ ।।
গত
কয়েকমাস ধরে কুমিল্লার বাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে চাল ও ভোজ্য তেলের
দাম। বস্তা প্রতি চালের দাম ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা আর তেল লিটার প্রতি ৩০-৩৫
টাকা বেড়েছে। বছরের প্রথম থেকে দাম বাড়া শুরু হলেও কমার কোন লক্ষণ দেখেছেন
না সাধারণ ক্রেতারা। দাম বাড়া নিয়ে বিরক্ত ক্রেতা বিক্রেতাসহ সবাই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা
বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।’ অন্যদিকে, করোনাকালীন সময়ে প্রয়োজনের
তুলনায় অতিরিক্ত চাল মজুদের কারণে বাজারে চালের সংকট দেখা দিয়েছে বলে
জানান তারা।’ এদিকে চালের মূল্যবৃদ্ধির প্রোপটে সরকার চাল আমদানির
সিদ্ধান্ত নিলেও এখনো বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। দ্রব্যমূল্যের এমন
ঊর্ধ্বগতিতে অস্বস্তিতে পড়েছেন ভোক্তারা। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষের
নাভিশ্বাস উঠেছে। তবে সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণ
হিসেবে প্রশাসনের উধাসিনতাকেই দায়ী করছেন।
নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের
ব্যবসায়ী শাহাদাত রকি বলেন, ‘গত বছর করোনার শুরুতে উচ্চবৃত্ত এবং
মধ্যবৃত্তরা প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমানে চালের মজুদ করার কারণে বাজারে
চালের সংকট দেখা দিয়েছে। আর এতে ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হচ্ছেন নি¤œমধ্যবৃত্ত ও
নি¤œবৃত্তরা। বাজারে নতুন চাল না আসা পর্যন্ত চালের বাজার এখন যেমন আছে,
তেমনই থাকবে। আমদানি করা চালের দাম বেশি হওয়ার কারণে দাম কমছে না বলেও
জানান তারা।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ব বাজারে ভোজ্য তেলের দাম না কমলে
দেশের বাজারেও কমার লণ নেই। তবে তেল আমদানিতে সরকার ভ্যাট কমালে দাম কিছুটা
কমতে পারে। তা না হলে সহসাই দাম কমবে না, বরং আরো বেড়ে যেতে পারে।’
গতকাল
নগরীর বিভিন্ন বাজারঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল এখন ৬৫
টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত ডিসেম্বরে এই চালের দাম ছিল ৬০ টাকা কেজি। একইভাবে
মিনিকেট চালও বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা কেজি। এছাড়া জিরা নাজির ৭৫ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে। কাটারিভোগ ৯০ টাকা, চিনিগুড়া পোলাও চাল ৯৫ টাকা,পাইজাম ৫৫
টাকা। আর গরিবের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। যা গত বছরের
ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ৭-৮ টাকা বেশি। অন্যদিকে প্রতি লিটার তেল রূপচাঁদা
১৩৫-১৪০ টাকা, তীর মার্কা তেল ১৩২ টাকা, বসুন্ধরা ১৩০-১৩৫ টাকা, চাঁন তেল
১৩০ টাকা ও পুষ্টি তেল ১৩৫-১৪০ টাকায় প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে। যা গত
বছরের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ৩০-৪০ টাকা বেশি।
রাজগঞ্জ বাজারে চাল কিনতে
আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘চাল আর তেলের দাম
নিয়ে আসলেই বেকায়দায় আছি। মাস শেষে বেতন পেলে টাকার হিসেব মিলাতে পারি না।
আর নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে রমজানে ভয়াবহ
অবস্থা হতে পারে। তিনি বাজারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেপ
কামনা করেন।’