Published : Tuesday, 9 March, 2021 at 12:00 AM, Update: 09.03.2021 1:09:08 AM
বিশেষ
প্রতিনিধি ॥ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক ও সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতির
নির্দেশে পুরোপুরি পাল্টে যায় পুরো বাংলাদেশের চিত্র। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ
প্রতিটি অরে অরে পালনে উত্তাল বিুব্ধ বাংলায় বিদ্রোহ-সংগ্রামের তরঙ্গ
টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ছড়িয়ে পড়ে। বাঙালীর প্রচ- বিােভে একাত্তরের এই দিনে
রেডিও-টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচার
করতে বাধ্য হয় পাকি শাসকগোষ্ঠীরা।
চোখের সামনে সবাইকে বোকা বানিয়ে
বঙ্গবন্ধুর কৌশলে স্বাধীনতার আহ্বানে হতভম্ভ হয়ে যায় পাকিস্তানী সামরিক
জান্তারা। বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বানিয়ে স্বাধীনতার আন্দোলনকে ভ-ুলের
শেষ পরিকল্পনাও ব্যর্থ হওয়ায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম দমনের
নীলনক্সা আঁটতে থাকে পাকি শাসক গোষ্ঠীরা।
উনিশ শ’ একাত্তরের ৮ মার্চ
বাংলার দামাল ছেলেরা চূড়ান্ত আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিতে থাকে।
আর ৭ মার্চে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্বুদ্ধ বাংলার জনগণ।
বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন তার পে দেশবাসী জেগে উঠতে শুরু করে।
বাংলার দামাল ছেলেরা নিজেরা দলে দলে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুতি
নিতে শুরু করে।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলন চলতেই থাকে। এ সময়
স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য স্বাধীনতা বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনের
সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর বাণী রেডিওতে প্রচার না করায়
বাঙালী ােভে ফেটে পড়ে। বেতার কর্মীদের আন্দোলনের কারণে পাকিস্তানীরা বাধ্য
হয় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বেতারে প্রচার করতে। ৮ মার্চ সকাল ৮টায় রেডিওতে ভেসে
আসে বঙ্গবন্ধুর সেই অবিস্মরণীয় ভাষণ- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির
সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
অন্যদিকে আগের মতোই
উত্তাল জনতা মিটিং-মিছিলে প্রকম্পিত করে রাখে সারাদেশ। ুব্ধ বাঙালীর মিছিলে
মিছিলে ঝাঁঝালো স্লোগানে উচ্চকিত ছিল সারাদেশ। প্রধান স্লোগান ছিল- ‘বীর
বাঙালী অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা,
পদ্ম-মেঘনা-যমুনা’, ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ ইত্যাদি।
এেেত্র
বসে নেই কুখ্যাত পাকিস্তানী বাহিনী। তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদররাও
বাঙালীর স্বাধীনতা আন্দোলন নস্যাতে তৎপর। কার্ফু দিয়েও সামরিক জান্তারা
সাহসী বীর বাঙালীদের ঘটে আটকে রাখতে না পেরে গোপনে আঁটতে থাকে নির্মম ও
নিষ্ঠুরভাবে বাঙালী নিধনের। একাত্তরের উত্তাল, ঝঞ্ছাবিুব্ধ বাংলাদেশে এই
দিনটিতে সারাদেশের সকল পাড়া, গ্রাম, মহল্লায় সংগ্রাম কমিটির পাশাপাশি
শান্তি-শৃঙ্খলা রা কমিটি এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠনের আহ্বান জানানো হয়।
বছর
ঘুরে এবার সত্যিই এক মাহেন্দ্রণে বাঙালীর জীবনে এসেছে অগ্নিঝরা মার্চ।
বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের স্বাপ্নিক স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলে পালিত হচ্ছে
মুজিববর্ষ। আগামী ২৫ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। মুজিববর্ষ ও
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর নানা কর্মসূচী পালিত হবে পুরো বছরজুড়েই।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে এবারের অগ্নিঝরা মার্চ
মাস বিশেষ তাৎপর্য বয়ে এনেছে পুরো জাতির জীবনে।