কুমিল্লায় গৃহ পরিচারিকাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিয়োগ,গ্রেফতার ১
ইসমাইল নয়ন ॥
Published : Tuesday, 9 March, 2021 at 7:45 PM
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের দধিখলা গ্রামের শারমিন (২৯) নামের এক যুবতীকে গৃহ পরিচারিকার কাজ দিবে বলে বাড়িতে থেকে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগে রেজাউল করিম নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শারমিনের মা বাদী হয়ে ধর্ষণ, হত্যা ও গুমের চেষ্টার অভিযোগে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দয়ের করেছে।
নিহত শারমিন আক্তার কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের দধিখলা গ্রামের দিনমুজর অদু মিয়ার মেয়ে। মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতারকৃত রেজাউল করিম একই ইউনিয়নের উত্তর চান্দলা গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় এবং নিহত শারমিনের মা জোৎস্না বেগম জানান, আমার স্বামী একজন দিনমুজর ও কৃষক। চার কন্যার সংসার নিয়ে কোন রকম অভাব অনটনের মধ্যদিয়ে দিনাতিপাত করছি। আমাদের পাশের উত্তর চান্দলা গ্রামের মনু মিয়া ছেলে রেজাউল করিম (৪০) ও আমাদের একই গ্রামের মৃত আব্দুল মালেক মুন্সির ছেলে বাবুল মিয়া (৪২) গত ৯ ফেব্রুয়ারি আমাদের বাড়িতে গিয়ে আমার মেয়ে শারমিন আক্তারকে তিন হাজার টাকা বেতনে রেজাউলের বাসায় গৃহ পরিচারিকার কাজ দিবে বলে প্রস্তাব দেয়। আমরা পরিবারের অস্বচ্ছলতার কথা ভেবে রেজাউল করিম ও বাবুল মিয়ার কথায় রাজী হই। পরে একই দিন সন্ধ্যায় আমার মেয়ে শারমিন আক্তার কে রেজাউল ও বাবুল মিয়া রেজাউলের বাসায় কাজ করার জন্য নিয়ে যায়। পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশের মাধ্যমে আমার ২য় মেয়ে জানতে পারে, কুমিল্লা আড়াইওড়া আব্দুল খালেকের ডুবার পাশে একটি যুবতী নারীর মরদেহ পরে রয়েছে এবং সেটি আমার মেয়ে শারমিনের মরদেহ কিনা দেখার জন্য। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার পরহিত জামা কাপড় দেখে শারমিনের মরদেহ সনাক্ত করি। এসময় আমরা শারমিনের পরহিত জামা কাপড় ছেড়া এবং দেহের বিভিন্ন স্থানে নখের আচঁড়সহ আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। পরে পুলিশ শারমিনের মরদেহের শোরতহাল প্রতিদেন তৈরি শেষে ময়না তদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমিক) হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
শারমিনের মা আরও জানান, আমার মেয়েকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে পরে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে এবং লাশ গুম করার চেষ্টা করে। এই ব্যাপারে আমি কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় রেজাউল করিম ও বাবুল মিয়াসহ অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। যাহার মামলা নং-৩৫, তারিখ- ১০/০২/২০২১ ইং। পরে পুলিশ মামলার প্রধান আসামী রেজাউল করিমকে তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা থেকে গ্রেফতার করে। এদিকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অপর পলাতক আসামী বাবুল মিয়া ও গ্রেফতারকৃত রেজাউল করিমের পরিবার হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় জীবন যাপন করছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) এস এম আরিফুর রহমান জানান, ব্রাহ্মণপাড়ার শারমিন হত্যা মামলার প্রধান আসামী রেজাউল করিম সহ আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছি এবং অজ্ঞাত বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ট চলছে।