গরমের এ সময়ে বড়দের পাশাপাশি অনেক শিশুও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দিনের বেলা গরম আর রাতে ঠাণ্ডা এ আবহাওয়ায় শিশুরা ঠিক মানিয়ে নিতে পারে না বলেই বাড়ছে অসুস্থতা। তাই এ সময় আবহাওয়ার পরিবর্তন বুঝে শিশুর যত্ন নিতে হবে।
প্রতিদিন গোসলশীত, গরম কিংবা বদলে যাওয়া আবহাওয়া যাই হোক শিশুকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। তবে গরম পড়তে শুরু করেছে বলেই যে স্বাভাবিক পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে তা নয়। শিশুর ঠাণ্ডার সমস্যা থাকলে এখনও হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করিয়ে দিন। জীবাণুমুক্ত রাখতে গোসলের পানিতে মিশিয়ে দিতে পারেন অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড। বাইরে থেকে ফিরে সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধুয়ে নিতে হবে।
আবহাওয়া বুঝে পোশাকশীত চলে গেছে ভেবে শিশুকে একেবারে পালতা কাপড় পরিয়ে রাখবেন না। আবার শীত শেষে শীতের পোশাক পরিয়ে রেখে শিশুর ঘাম ঝরাবেন না। এতে শিশুর ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। এখন দিন ও রাতের কোন সময়টাতে হালকা ঠাণ্ডা থাকছে কিংবা গরম পড়ছে সে অনুযায়ী শিশুর পোশাক নির্বাচন করুন।
অসুখ থেকে দূরে রাখতেসাধারণত ঋতু পরিবর্তনের এ সময়টাতে শিশুদের জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, বদহজমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। শিশু ভাইরাসজনিত সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হলে বেশি করে আনারস খাওয়াতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, আনারসের মধ্যে আছে এনজাইম, যা কাজ করে প্রদাহনাশক এবং মিউকোলাইটিক হিসেবে। তবে খুব ছোট শিশুদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়ানো উচিত হবে না। ভিটামিন “সি” জাতীয় অন্যান্য ফলমূলও সর্দি-কাশির জন্য উপকারি।
এছাড়া তুলসি পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়ালেও শিশু আরাম পাবে। ডায়রিয়া থেকে রক্ষায় শিশুকে অবশ্যই ফুটানো পানি পান করাতে হবে। রান্না ও খাবার পরিবেশনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
ত্বকের যত্ন নিনশীতের শেষের দিকে ত্বক আরও বেশি খসখসে হয়। তাই গোসলের পর শিশুর শরীর ও মুখে ভালোমানের বডিলোশন ও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে দিন। যেহেতু এখন দিনের বেলায় হালকা গরমও পড়ছে তাই ঘাম আটকে শিশুর বগলের নিচে, কুচকিতে ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। তাই গোসলের সময় শিশুর বগল, গলার নিচের জায়গাগুলো পরিষ্কার করে দিন। হাত-মুখ ধোয়ার পর শিশুর ত্বকে বেবিলোশন কিংবা অলিভঅয়েল লাগিয়ে দিন।
অ্যালার্জি সমস্যায়শীতের শেষের দিকে শিশুর শরীরে চুলকানি ও র্যাশের মতো বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দেয়; যা পরবর্তীতে মারাত্মক ফুসকুড়িতে পরিণত হতে পারে। এজন্য যেসব শিশুর অ্যালার্জি আছে, তাদের ফুল থেকে দূরে রাখুন। আর বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই শিশুকে মাস্ক পরিয়ে দিন।
এসি ও ফ্যানের বাতাসে সচেতন থাকুন
শিশুর শরীর ঘামছে বলে জোরে ফ্যান চালাবেন না বা এখনই এসি ব্যবহার করবেন না। যদি ফ্যান চালাতেই হয় তবে হালকা করে ছেড়ে রাখুন। এ সময় রাতে ফ্যান না চালানো উচিত। অনেক সময় শুধু ফ্যানের বাতাসের কারণেও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে।
চুলের যত্নগরমে ছোট শিশুদের চুল ছেঁটে দিন। এতে শিশু আরাম পাবে। মেয়ে শিশুর চুল বড় থাকলে পনিটেইল করে রাখুন।
খাবার-দাবারঋতু পরিবর্তনে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় বেশি, তাই এ সময় শিশুকে ভাজাপোড়া খাবার, বাসি কেক, পেস্টি, দোকানের জুস থেকে দূরে রাখুন। বাইরের খাবারের বদলে শিশুকে মৌসুমি ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সরাসরি ফল খেতে না চাইলে জুস করে দিন। সেই সঙ্গে বেশি বেশি পানি পান করতে দিন।